দৈনিক সমাজের কন্ঠ

ভিপি নূরের বিরুদ্ধে একাত্তর টিভির মিথ্যাচারের অভিযোগ

সমাজের কন্ঠ ডেস্ক: ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরের একাত্তর টেলিভিশন বর্জনের বিষয়ে সাংবাদিক নেতাদের একাংশ বলছেন, তার এ ডাক সব সংবাদ মাধ্যমকেই একটি নেতিবাচক বার্তা দেয়৷

তারা আরো বলেন, ‘‘গণমাধ্যমে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে স্টেট অ্যাক্টর যেমন আছে, তেমনি নন-স্টেট অ্যাক্টরও আছে৷ নূরের এই বর্জনের আহ্বান নন-স্টেট অ্যাক্টরের৷’’

নুরুল হক নূর অবশ্য দাবি করছেন, তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে একাত্তর টেলিভিশন বর্জন করছেন, বর্জনের কোনো ডাক দেননি৷ এখন তার অনুসারীরা বর্জন করলে তার কিছু করার নেই৷ অনুসারীরা বর্জনের ডাক দিলে সেটা তাদের বিষয়৷

নূরের আরো দাবি, ‘‘একাত্তর টিভি মিথ্যা ও বাংলাদেশেরে সামাজিক মূল্যবোধ পরিপন্থি খবর পরিবেশন করে৷ মানুষকে নিয়ে তারা বিব্রত করে৷ তারা বিকৃত করে খবর প্রকাশ করে যা দেশের জনগণের জন্য, মূল্যবোধের জন্য ক্ষতিকর৷ এজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে একাত্তর টিভির কোনো প্রোগ্রামে অংশ নিতে চাই না৷ তাদের সমস্ত অনুষ্ঠান আমার পক্ষ থেকে আমি বর্জন করেছি৷  এই ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সবারই আছে৷”

তিনি বলেন, ‘‘আমি আমার জায়গা থেকে বর্জনের ডাক দিয়েছি৷ সেক্ষেত্রে আমার ফ্যান-ফলোয়াররা আমাকে অনুসরণ করলে করতে পারে৷’’

তার দাবি, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী-ধর্ষণের মামলা নিয়ে যে নিউজগুলো একাত্তর টিভি করেছে তার অ্যাঙ্গেল দেখলেই তাদের উদ্দেশ্য পরিস্কার হবে৷ আমাদের ধর্ষণবিরোধী সমাবেশকেও তারা রাজনৈতিক সমাবেশ বলে অপপ্রচারমূলক খবর পরিবেশন করেছে৷”

‘আমি ব্যক্তিগতভাবে একাত্তর টিভির কোনো প্রোগ্রামে অংশ নিতে চাই না’

নূরের এসব দাবি বা অভিযোগ প্রসঙ্গে একাত্তর টিভি’র হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ বলেন, ‘‘নূর যে বর্জনের ডাক দিয়েছেন এটা দুঃখজনক৷ কিন্তু এটা অনুমেয় ছিল৷ কোনো অপরাধী যখন তার অপরাধ আড়াল করতে চায়, তখন সে উল্টো অভিযোগ তোলে৷ এবং নূর পুরনো এি উপায় বা কৌশল অবলম্বন করছেন৷ সেই একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীদের যেভাবে ইসলামবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা হয়েছিল নূর একইভাবে একাত্তর টেলিভিশনের বিরুদ্ধেও খুবই ঘৃণ্যভাবে একই কৌশল নিয়েছেন৷’’

শাকিল বলেন, ‘‘নূরের কাছে  একটি ছোট্ট প্রশ্ন ছিল- তার সহযোদ্ধাদের যাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তাদের তিনি কেন রক্ষা করছেন? এর উত্তরে তিনি একটি ভুল তথ্য দিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, যে নারী অভিযোগ করেছেন লঞ্চে তাদের হাস্যোজ্জ্বল ছবি দেখা গেছে৷’’

শাকিলের আরো দাবি, ‘‘তিনি (নূর) নারীকে দুস্কৃতিকারীর লেবেল দিয়েছেন৷ কিন্তু নূরের তথ্য সত্য ছিল না৷ কারণ, তিনি (অভিযোগকারী নারী) যখন ফিরছিলেন তখন ধর্ষণের শিকার হন আর ওই ছবিটি লঞ্চে করে যাওয়ার সময়ের৷ ফলে তিনি যে নানাভাবে তাদের রক্ষা করছেন, তিনি যে নারীর সম্মান রক্ষা করতে পারেননি তা তার বক্তব্য এবং কার্যকলাপে বের হয়ে এসেছে৷”

‘‘নূরের এই বর্জনের ডাককে সাংবাদিক নেতারা অনৈতিক চাপ হিসেবে দেখছেন৷ তবে আমরা একাত্তর টেলিভিশনের পক্ষ থেকে নূরের এই বিষয়টি দর্শকদের কাছেই ছেড়ে দিতে চাই৷ আমরা সব পক্ষের, সব মতের খবর প্রচার করবো৷ নুরের খবরও আমরা প্রচার করছি৷ আমরা আমাদের নীতিতে অটল থাকবো,’’ বলেন শাকিল আহমেদ৷

 

  • DW