সমাজের কন্ঠ স্পোর্টস ডেস্ক – জয় দিয়ে শুরু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ মিশন।পাকিস্তানের লজ্জাজনক পরাজয়। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সাথে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ শব্দের পরিচয় বহু পুরানো। আজ ৩১শে মে (শুক্রবার) বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে তারা এতটা আনপ্রেডিক্টেবল হয়ে উঠবে, তা বোধ হয় ভাবেননি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট বোদ্ধাও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লজ্জাজনক পরাজয় দিয়েই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে সরফরাজ আহমেদের পাকিস্তান দল।
টেন্ট ব্রিজে আজ (শুক্রবার) ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে কোনোরকম পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ম্যাচটি তারা হেরেছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। ২১৮ বল হাতে রেখে জিতেছে ক্যারিবীয়রা। এ নিয়ে টানা ১১ ওয়ানডেতে হারের লজ্জা দেখলেন সরফরাজরা।
ওয়েষ্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য মাত্র ১০৬ রানের। এতো ছোট লক্ষ্য পেরোতে খুব বেশি সময় নষ্ট করেনি জেসন হোল্ডারের দল। ১৩.৪ ওভারেই পৌঁছে গেছে জয়ের বন্দরে।
ওপেনিংয়ে নেমে ৩৪ বলে ৫০ রানের ঝড় তুলে আউট হন ক্রিস গেইল। ক্যারিবীয় ওপেনারকে ফেরান আমির। তার আগে শাই হোপ (১১) আর ড্যারেন ব্রাভোকেও (০) সাজঘরের পথ দেখান এই পেসারই।
এই ম্যাচে পাকিস্তানের প্রাপ্তিও আমিরের এই ফর্মে ফেরা বোলিং। নিশ্চিত পরাজয়ের ম্যাচেও দলকে ভরসা দিয়েছেন শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেয়া এই পেসার। ৬ ওভারে ২৬ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন ৩টি উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ক্যারিবীয় বোলারদের তোপে ২১.৪ ওভারেই ১০৫ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। শুরু থেকেই যাচ্ছেতাই অবস্থা ছিল তাদের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে শেলডন কট্রেলের শিকার হয়ে ফেরেন ইমাম উল হক (২)। দুই ওভার পর আন্দ্রে রাসেলের বাউন্সারে নাকাল ফাখর জামান।
ফাখর অবশ্য আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলছিলেন। ১৬ বলে ২ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ২২ রান করা এই ব্যাটসম্যানের হেলমেটে বল লেগে সেটা পড়ে স্ট্যাম্পের উপর। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি।
পাকিস্তান তৃতীয় উইকেটটিও হারায় রাসেলের গতিতে। ১৪৫ কিলোমিটার গতির বলটিতে শট খেলতে একটু দেরি হয়ে যায় হারিস সোহেলের। ব্যাটে ছোঁয়া লেগে সেটি চলে যায় উইকেটরক্ষক শাই হোপের হাতে। ১১ বলে ৮ রান করে হারিস।
বরাবরের মতো বাবর আজম একটা প্রান্ত ধরে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। তারও শেষ রক্ষা হয়নি। ওসানে থমাসের অফ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া একটি বলে ড্রাইভ করে উইকেটের পেছনে হোপের দুর্দান্ত এক ক্যাচ হয়েছেন ৩৩ বলে ২২ রান করা এই ব্যাটসম্যান।
এরপরের কাজটা সেরেছেন জেসন হোল্ডার। ১৭তম ওভারে এসে সরফরাজ আহমেদ (৮) আর ইমাদ ওয়াসিমকে (১) ফিরিয়ে পাকিস্তানের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নটাও ভেঙে দেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক।
এরপর পাকিস্তান ব্যাটিংয়ের লেজটা মুড়ে দিতে আর সময় লাগেনি হোল্ডার-থমাসদের। ২০তম ওভারে এসে শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজ ২৪ বলে ১৬ রান করে থমাসের শিকার হন। নবম উইকেট হারায় পাকিস্তান।
দশম উইকেটে মোহাম্মদ আমিরকে নিয়ে ওয়াহাব রিয়াজ ১৩ বলে গড়েন ২২ রানের জুটি। তাতেই কোনোমতে একশর ঘর পেরোয় সরফরাজের দল। ১১ বলে ১টি চার আর ২টি ছক্কায় ১৮ রান করা ওয়াহাবকে বোল্ড করে পাকিস্তানের ইনিংসের যবনিকা টেনে দেন থমাস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফলও এই থমাস। ২৭ রানে ৪টি উইকেট এই পেসার। ৩টি উইকেট শিকার জেসন হোল্ডারের।