স্টাফ রিপোর্টার :যশোরের অভয়নগর উপজেলার জলাবদ্ধ বিলের পানি সেচে বোরো আবাদের উদ্যোগ নিয়েছেন কৃষকেরা। ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে দিনরাত বিল থেকে পানি সেচে তারা রোরো চাষের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জলাবদ্ধ বিল এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভবদহ ¯øুইসগেটের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় চাতরা বিলের নিচের দিকের প্রায় ৬০০ বিঘা (৪২ শতকে এক বিঘা) জমিতে কোনো ফসল হয় না। বাধ্য হয়ে বিল সংলগ্ন চাতরা বিল এলাকার কৃষকরা সমিতি করে কোটা ,চলিশিয়া বেদভিটা, পায়রা গ্রামের কৃষকরা ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বোরো আবাদের উদ্যোগ নিয়েছে। একটি মহল খাল বেধে সেচ দেয়ার বিরোধীতা করছেন বলে কৃষকরা জানিয়েছে।
রোববার (১১/১/২০) দুপুরে বিলটিতে যেয়ে দেখা যায়, ৭ টি ডিজেলচালিত (বড়) সেচযন্ত্র দিয়ে চাতরা বিলের খালের পাড়ে বসিয়ে বিলের পানি সেচে খালে ফেলা হচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা চারটি সেচযন্ত্র সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। কৃষক শফিয়ার রহমান (৫৩) জানান, টেকা নদীতে পড়ি পড়ে ভবদহ ¯øুইসগেট দিয়ে পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় বিলের নিচের অংশে বোরোর আবাদ করা যায়না। চাতরা বিলের খালের পাড় বেঁেধ প্রায় ২০ দিন ধরে তারা ৭টি ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে দিনরাত বিলের পানি নিষ্কাশণের কাজ শুরু করেন। এ পর্যন্ত বিলের অধিকাংশ অনেক পানি কমেছে। বিলে এখনও এক ফুট পানি রয়েছে। তারা জানান, চাতরা বিলে যে সকল কৃষকের জমি রয়েছে তারাই সমিতি করে ডিজেল কিনে পানি সেচ শুরু করেন। তারা গত বছর এভাবে সেচ দিয়ে লাভবান হয়েছে। যে কারণে এ বছরও তারা আবার এ কাজ শুরু করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন একটি মহল খালে বাধ দিয়ে পানি সেচের বিরোধীতা করছেন। তাদেরতো বিলে কোন জমি নাই।
চাতরা বিল সমিতির সাধারন সম্পাদক মোস্তফা কামাল জানান “ চাতরা বিলে যাদের জমি রয়েছে তাদের দিয়ে আমরা সমিতি করে পানি সেচের কাজ করছি। কোন সাহায্য ছাড়াই আমরা এ পর্যন্ত প্রায় প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা খরচে করেছি। গত বছর করে আমরা লাভবান হয়েছি তাই এবারও করার উদ্যোগ নিয়েছি।
কোটা গ্রামের কৃষক মো: সেলিম হোসেন (৪৫) সেচ এলাকায় আড়াই বিঘা জমি আছে। তিনি বলেন,‘তিন বছর জমিতি ধান হইনি। আমরা খুব কষ্টে আছি। এবার জমিতি ইরি (বোরো) ধান হবে বলে আশায় বুক বাধিছি।’
সমিতির সভাপতি মো: আব্দুল কুদ্দুস তরফদার বলেন,‘তিন বছর বিলের প্রায় ৬০০ বিঘা জমিতে কোন ফসল হয় না। উপায়ন্তর না পেয়ে আমরা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এ উদ্যোগ নিয়েছি। অবিরাম আট দিন সেচ মেশিন চালানোর পর প্রায় দেড় ফুট পানি কমেছে। পুরো বিলের পানি নিষ্কাশনে আরও ৮ থেকে ১০ দিন সময় লাগতে পারে।’ তবে এখনও পর্যন্ত কোন সরকারি সাহায্য পাইনি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সামদানী বলেন,‘বিষয়টি আমি শোনার পর দেখতে গিয়েছিলাম। এটা একটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু আমরা আর্থিক ভাবে কোন সাহায্য করতে পারেনি।”