ভোট চুরি করে দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে বেলারুশ

0
0

তিনি সব বৈধতা হারিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন। নির্বাচন অবাধ ও স্বাধীন হয়নি বলে এর নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার প্রাগ এবং ওয়ারশ’তে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
গত ৯ই আগস্ট সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এতে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট শতকরা ৮০.১ ভাগ এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান বিরোধী দলীয় প্রার্থী সভেতলানা তিকানোভস্কায়া (৩৭) শতকরা মাত্র ১০.১২ ভাগ ভোট পেয়েছেন বলে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দেয়। এতে প্রেসিডেন্ট নিজেকে ভূমিধস বিজয়ী বলে দাবি করছেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তার এ বিজয়কে মেনে নিতে নারাজ। এরই মধ্যে সভেতলানা তিকানোভস্কায়া দেশ ছেড়েছেন। তবে তার অনুগতরা রাজপথ কাঁপিয়ে তুলেছেন। এ অবস্থায় রোববার প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো তার সমর্থকদের দেশের পক্ষে দাঁড়াতে এবং স্বাধীনতাকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন। সহায়তা চেয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কাছে। পুতিনও তাকে সব রকম সহযোগিতা দিতে রাজি হয়েছেন বলে বলা হচ্ছে। পুতিন বলেছেন, সামরিক সহযোগিতা প্রয়োজন হলেও তা তিনি দেবেন বেলারুযশের প্রেসিডেন্টকে।
এমন এক রাজনৈতিক ক্লাইম্যাস্কে বিরোধী বিক্ষোভকারীরা দমে যান নি। তাদের মধ্যে উল্টো গতি এসেছে। তাদের বিক্ষোভে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ। নিরপেক্ষ সংবাদ ভিত্তিক সাইট টুট ডট বাই এই বিক্ষোভকে স্বাধীন বেলারুশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ বলে আখ্যায়িত করেছে। এ পর্যন্ত দেশটিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬৭০০ মানুষকে। তাদের অনেকে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। রাষ্ট্র পরিচালিত কারখানাগুলোর কর্মীরা গত সপ্তাহে আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে কাজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এ সপ্তাহে আরো ধর্মঘটের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর ওপর ক্রমশ চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করবে বিরোধীরা।
নির্বাচনে বিরোধী দলীয় প্রার্থী সভেতলানা তিকানোভস্কায়া বলছেন, ভোট যথাযথভাবে গণনা করা হয় নি। তিনি শতকরা ৬০ ভাগ থেকে ৭০ ভাগ সমর্থন পেয়েছেন বলে তার দাবি। প্রকাশ্যে তিনি এই ফলের নিন্দা জানিয়ে দেশ ছেড়েছেন। চলে গেছেন লিথুয়ানিয়ায়। সেখানে রয়েছে তার সন্তানরা। তিনি তাদের কাছে ফিরে গেছেন। ওদিকে রোববার পরস্পরবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানীতে। স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে, সরকারপন্থি গ্রুপের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন প্রায় ৩১ হাজার মানুষ। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এই সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার। তবে বার্তা সংস্থা এএফপির এক রিপোর্টারের দাবি এই সংখ্যা ছিল ১০ হাজারের কাছাকাছি। তাদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো বলেন, আপনারা এখানে এসেছেন ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার। আপনারা এসেছেন দেশকে, দেশের স্বাধীনতা, আপনার স্ত্রী, বোন ও সন্তানদের পক্ষে থাকার জন্য। কিন্তু বিরোধীরা গর্তের ইঁদুরের মতো হামাগুঁড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসবে, যদি তাদেরকে এখন দামিয়ে রাখা না যায়।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টপন্থি এই বিক্ষোভে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন খাতের কর্মীদের যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। হুমকি দেয়া হয়েছে, যোগ না দিলে চাকরি থাকবে না। কয়েকদিন ধরেই রাষ্ট্র পরিচালিত কারখানাগুলোর কর্মীরা ওয়াকআউট করছিলেন। তাদের অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন বিরোধী দলের বিক্ষোভে। টুট ডট বাই ওয়েবসাইটের মতে, প্রেসিডেন্ট যখন বক্তব্য রাখছিলেন তখন রাজধানীর স্টেলা মিনস্ক হিরো সিটি ওয়ার্ল্ড ওয়ার টু-স্মৃতিস্তম্ভের কাছে লুকাশেঙ্কো বিরোধীদের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন দুই লাখ ২০ হাজার মানুষ।

– মানবজমিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here