নাজিম উদ্দীন জনি,শার্শা(বেনাপোল)প্রতিনিধিঃ যশোরের বেনাপোলে সুদের টাকার জন্য সন্তানকে গুম ও নিজের বসতভিটা জোর পূর্বক দখল করে ঘর নির্মান করেছে বলে বিল্লাল নামের এক সুূদখোর(দাদন ব্যাবসায়ী) ও তার সহোদরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে এক বৃদ্ধা নারী। এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বেনাপোল পৌর এলাকার ভবের বেড় দীঘির পাঁড় এলাকায়।
জানাগেছে,বেনাপোল ভবের বেড় দিঘীর পাঁড় এলাকার মৃত হাসমত ব্যাপারীর ছেলে আকবর হোসেন গত ৮ বছর আগে সাংসারিক প্রয়োজনে একই এলাকার শেখ মান্দার বক্সের ছেলে সুদখোর(দাদন ব্যবসায়ী) বিল্লালের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা সুদে নিয়েছিলো।এই টাকার সুদ লাভের টাকা আকবরের কাছ থেকে প্রতি মাসে নিয়ে নিতো সুদখোর বিল্লাল।এর এক পর্যায়ে আকবর ছয় লাখ টাকার পুরাটা শোধ করে দিতে চাইলে তখন সুদে আসলে অনেক টাকা দাবি করে বসেছিলো সুদখোর বিল্লাল। হঠ্যাৎ একদিন বিল্লাল ও তার সহদর হাসেম,বাবু ও জিয়া টাকার হিসাব করবে বলে আকবরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়।সেই থেকে আকবর আজও বাড়ি ফেরেনি। এখনো প্রায় ছয় বছর নিখোঁজ আছে আকবর।
আকবরের বৃদ্ধা মা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন,আমার সন্তান আকবরকে ঐ সুদখোর বিল্লাল ও তার ভাইয়েরা আটকে রেখে একদিন আমাকে ফোনে ডেকে একটি সাদা কাগজে সই করে নিয়েছিলো।তারা বলেছিল সই করলে তোর ছেলেকে ছেড়ে দেব। আমি সই করি দিয়েছিলাম। কিন্তুু আমার ছেলে আজ ও বাড়ি আসেনি।আমি কতবার ওদের কাছে আমার ছেলের খোঁজ চাইছি ওরা বলে সে আছে কাজে সময় মতো চলে আসবে।আসবে আসবে করছে এই ছয় বছর ধরে কিন্তুু আজও আমার সোনা বাড়ি এলোনা।এখন সেই সুদের টাকার জন্য আমার বসতভিটা দখল করে নিয়ে সেখানে ঘর নির্মান করছে সুদখোর বিল্লাল ও তার ভাইয়েরা।আমার ছেলের কাছে ওরা পাবে ছয় লাখ টাকা আর আমার স্বামীর কিনা এ বসতভিটা ৬ কাটা যার দাম প্রায় ত্রিশ লাখ টাকা। আমি বেনাপোল পোর্ট থানায় অভিযোগ করিলাম কিন্তুু পুলিশ আমাকে সাহায্য করিনি।আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই এবং সঠিক বিচার চাই।
আকবরের স্ত্রী মর্জিনা জানান,আমার স্বামীকে বিল্লাল ও তার ভাইয়েরা ডেকে নিয়ে গিয়েছিলো সেই থেকে আমার স্বামী আর ফিরে আসেনি।আমার ছেলে মেয়ে ও বৃদ্ধা শাশুড়ীকে নিয়ে অনেক কষ্ট করে গত ছয় বছর যাবত জীবনযাপন করছি।এখন আমার শশুরের বসতভিটা টা ও বিল্লাল ও তার ভাইয়েরা মিলে জোর পূর্বক দখল করে নিয়ে ঘর নির্মান করেছে। আমি আমার ছোট ছেলে মেয়ে ও বৃদ্ধা শাশুড়ীকে নিয়ে কোথায় থাকবো।আমি এ অন্যায়ের বিচার চাই এবং আমার স্বামীকে ফেরত চাই।আমি যাতে সঠিক বিচার পাই এ জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বিল্লালের কাছে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান,আমি আকবারের কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ওই জমি ক্রয় করে কবলা দলিল করে নিয়েছি।পুলিশ তদন্ত শেষে আমার পক্ষে রায় দিয়ে ঘর করার অনুমতি দিয়েছে।
বেনাপোল পোর্ট থানান উপপরিদর্শক এসআই রোকনুজ্জামান জানান,আকবরের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং দুই পক্ষকে নিয়ে বসে কথা বলি।বিল্লাল জমিটা ক্রয় করেছে এই মর্মে আমাকে একটি কবলা দলিল দেখিয়েছিলো এবং আকবরের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দিয়েছিলো এবং আকবর আমার কাছে জমি বিক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করেছিলো।
বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান জানান,বিষয়টি আমি শুনেছি। আমি বাজার কমিটির সকলের সাথে কথা বলেছি।যাহাতে বৃদ্ধা মা ও আকবরের অসহায় স্ত্রী সঠিক বিচার পাই এবং আকবরকে ফেরত পাওয়া যায় তার জন্য আমরা বসে মিমাংসার চেষ্টা করবো।