ডাঃ নিলয় ষুভ – টানা তৃতীয়বারের মতো দেশসেরা হয়েছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ২০১৫ ও ২০১৭ সালেও হাসপাতালটি শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিল।
রোববার (৭ এপ্রিল) আড়ম্বরপুর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হাসপাতালটির পরিচালকের হাতে দেশসেরা পদক -২০১৮ তুলে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। যৌথভাবে এই পদকটি প্রদান করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
২০১৮ সালে কলেজ লেভেলে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
সরকারের স্বাস্থ্যব্যবস্থা জোরদারকরন কার্যক্রমের আওতায় সেরা পারদর্শী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রবর্তিত ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদক’। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন এমআইএস হাসপাতালগুলো পরিদর্শনের ভিত্তিতে সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন করা হয়।
‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদক- ২০১৮’ গ্রহণ করছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া।
স্বাস্থ্যসেবার সবগুলো সূচকে উপরে থাকায় টারশিয়ারি লেভেলে হাসপাতাল ক্যাটাগরিতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি এই পদকে ভূষিত হয়। হাসপাতালটি এর আগে ২০১৫ দ্বিতীয় ও ২০১৭ সালে প্রথম স্থান অধিকার করে। ২০১৬ সালে পদকটি প্রদান করা হয়নি, সে হিসেবে টানা তৃতীয়বারের মতো পদক অর্জনের রেকর্ড গড়েছে হাসপাতালটি। ২০১৫ ও ২০১৭ সালে যারা সোহারাওয়ার্দী হাসপাতালের সঙ্গে পদক পেয়েছিলেন, তারা নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে ব্যর্থ হলেও সফলতা দেখিয়েছে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল।
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র শেরে-বাংলা নগরে অবস্থিত হাসপাতালটি শুধু অব্যবস্থাপনার সংকটে সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছিল। ২০১৫ সালে হাসপাতালটির পরিচালক পদে রদবদল হয়। দায়িত্ব দেওয়া হয় অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়াকে। এরপর থেকে বদলে যেতে থাকে দৃশ্যপট।
হাসপাতালটির সামনের বিশাল ফাঁকা মাঠে এক সময় ছিল ময়লার ভাগাড়, হাসপাতালে প্রবেশ করতে নাক চেপে যেতে হতো, সন্ধ্যার পর চলতো অসামাজিক কার্যক্রম। সেখানে ফুলের সুবাস, ভাগাড় পরিণত হয়েছে ফুলের বাগানে। নেই কোনো দালালের দৌরাত্ম্য। অন্যান্য হাসপাতালে সান্ধ্যকালীন রাউন্ডে যখন জুনিয়র চিকিৎসক দিয়ে সারানো হয়; সোহারওয়ার্দী হাসাপাতালে তখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে।
ডিজিটালাইজেশনেও অনেক এগিয়ে গেছে এই হাসপাতাল। টিকিট কাউন্টার থেকে ভর্তি এবং বিভিন্ন রকম টেষ্টের ফি জমাসহ অন্যান্য কার্যক্রম পুরো ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন ভোগান্তি কমেছে, তেমনি চুরি বন্ধ হয়ে রাজস্ব বেড়েছে ধারণাতীতভাবে।
হাসপাতালটির পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, সেবার স্বীকৃতি পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। আমাদের এই অর্জনের ক্রেডিট দেব নার্স -কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। তারা ভালোভাবে সেবা দিয়েছে বলেই আজ এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। সোমবার (৮ এপ্রিল) ৫০ কেজি ওজনের কেক কেটে সেলিব্রেশন করা হবে।
তিনি বলেন, প্রত্যেকটা কাজের স্বীকৃতি প্রয়োজন। আর স্বীকৃতির মাধ্যমে দায়িত্ববোধ ও আন্তরিকতা আরও বেড়ে যায়। আমাদের ধারবাহিক এই স্বীকৃতি ভবিষ্যতে আরও ভালো সেবা প্রদানের পাথেয় হবে।
— প্ল্যাটফর্ম