ইমরান হোসেন সাকিবঃ বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলায় চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ ২৪৮ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করে। এর মধ্যে ৮৮ বোতল বিক্রির সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা করায় শিবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র এএসপি আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়।
এছাড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ও একজন সাব-ইন্সপেক্টরকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা কর্মকর্তারা হলেন, বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শাহীনুজ্জামান ও ফেনসিডিল উদ্ধার মামলার বাদী এসআই সুজাউদ্দৌলা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গত ৩ এপ্রিল রাতে বগুড়ার শিবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পাশে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়। তল্লাশির সময় ঢাকাগামী খালেক পরিবহন থেকে নাজিম নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ বোতল ও পিংকি পরিবহন থেকে সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে ১৯৮ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সুজাউদ্দৌলা পরদিন শিবগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করেন। তবে পিংকি পরিবহন থেকে ১৯৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হলেও ১১০ বোতল দেখিয়ে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদস্যরা অভিযোগ করেন, অসাধু পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের সোর্সের মাধ্যমে ৮৮ বোতল ফেনসিডিল বিক্রি করে দেন। খোদ উদ্ধারকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
এ ব্যাপারে অভিযোগ উঠলে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা মঙ্গলবার মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে ফেনসিডিল উদ্ধারকারী কর্মকর্তা ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এছাড়া এ সংক্রান্ত দুটি মামলা তদন্তের জন্য নথি ডিবি পুলিশকে দেন।
অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা বুধবার মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শাহীনুজ্জামানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সের ওয়্যার হেডকোয়ার্টারে ও ফেনসিডিল উদ্ধার মামলার বাদী সাব-ইন্সপেক্টর সুজাউদ্দৌলাকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করেন। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলায় পুলিশ সদর দফতর থেকে শিবগঞ্জ সার্কেল সিনিয়র এএসপি আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুর রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এর পেছনের কারণ সম্পর্কে তার কিছু জানা নেই।
বগুড়ার শিবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, তার নেতৃত্বে ফেনসিডিল উদ্ধার হয়নি। ৮৮ বোতল ফেনসিডিল বিক্রির অভিযোগ উঠলেও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। সিজার লিস্টে ২৪৮ বোতল ফেনসিডিল উল্লেখ আছে।
তিনি দাবি করেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধে কোনো পুলিশ সদস্য এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন