সমাজের কণ্ঠ ডেস্ক :জুলাই ৬, ২০১৯ – স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশের সব নদী তীর দখলমুক্ত করার কাজ চলছে। পুনর্দখলের চেষ্টা করলে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে খোলামোড়া ঘাটে সীমানা পিলার, ওয়াকওয়ে, নদী তীর রক্ষায় (কিওয়াল) এবং ওয়াকওয়ে অন পাইল নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
বুড়িগঙ্গাসহ দেশের সব নদী দখলমুক্ত করে বাংলাদেশের নদীমাতৃক রূপ আবার ফিরিয়ে আনা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুড়িগঙ্গাকে পুরোনো রূপে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশে সার্কুলার নৌপথ চালু করে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন সহজ করা হবে। বুড়িগঙ্গাকে হাতিরঝিলের মতো নয়নাভিরাম করা হবে। অচিরেই এ জায়গা হবে আনন্দ ও বিনোদনের কেন্দ্র।
এ সময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ১০ বছরের মধ্যে বুড়িগঙ্গা নদীর পানিকে দূষণমুক্ত করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী করতে চাই। মানুষের জীবিকার জন্য নদী ব্যবহৃত হবে-আমরা সেরকম পরিবেশ গড়ে তুলব। তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত করতে সরকার কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে কেউ হস্তক্ষেপ করলে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী রক্ষায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নদী রক্ষায় শুধু ঢাকার মানুষ নয়; সারা দেশের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম, হাজি মো. সেলিম, নৌসচিব আবদুস সামাদ, কলামিস্ট ও পরিবেশবিদ সৈয়দ আবুল মকসুদ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব উল ইসলাম এবং প্রকল্প পরিচালক নুরুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিআইডব্লিউটিএ এ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। নদীর তীরভূমিতে সীমানা পিলার স্থাপন, ওয়াকওয়ে, কিওয়াল, ওয়াকওয়ে অন পাইল ইত্যাদি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে আজ শনিবার থেকে ঢাকা নদীবন্দর এলাকায় ৩,৮০৩টি আরসিসি সীমানা পিলার, রামচন্দ্রপুর হতে বসিলা ও রায়েরবাজার খাল হতে কামরাঙ্গীরচর পর্যন্ত এক কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, এক কিলোমিটার কিওয়াল, দুই দশমিক পাঁচ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে অন পাইল স্থাপন করা হবে। আরসিসি সীমানা পিলারের মধ্যে ২,৩৪০টি সিঙ্গেল পাইলের এবং ১,৪৬৩ টি ডাবল পাইলের হবে। এসব সীমানা পিলার নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। রামচন্দ্রপুর হতে বসিলা ও রায়েরবাজার খাল হতে কামরাঙ্গীরচর পর্যন্ত এক কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, এক কিলোমিটার কিওয়াল এবং দুই দশমিক পাঁচ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে অন পাইল নির্মাণ/স্থাপনে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
বিআইডব্লিউটিএ প্রকল্পের আওতায় বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে সীমানা পিলার স্থাপন, ওয়াকওয়ে, কিওয়ালসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করবে। নদীর তীরভূমিতে ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ, নদীর তীরভূমিতে পাইলের ওপর ১২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, ১০, ৮২০টি সীমানা পিলার স্থাপন, তিনটি ইকোপার্ক নির্মাণ, দুটি পর্যটন বান্ধব দৃষ্টিনন্দন পার্ক, ১৯টি আরসিসি জেটি, ১০০টি আরসিসি সিঁড়ি, ৪০ কিলোমিটার নদীর তীর রক্ষা (কিওয়াল) সহ আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ করা হবে। এ জন্য প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।