এমন অত্যাধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন চোর রাজধানীতে

0
1

সমাজের কণ্ঠ  ডেস্ক –  ২২ জুলাই, ২০১৯ :অনেকটা সিনেমার গল্পের মতো করে রাজধানীর বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে গত ১৫ বছর ধরে চুরি করে আসছিলো একটি চক্র। কিন্তু একবারও ধরা পড়েনি। ডিজিটাল লকসহ যেকোনো ধরণের নিরাপত্তা কোড অবলীলায় ভেঙ্গে ফেলে হাতিয়ে নিতো লাখ লাখ টাকা।

অবশেষে শেষ রক্ষা হয়নি। উত্তরার একটি বাণিজ্যিক ভবনে চুরির পর চার সদস্যের চক্রটি গ্রেপ্তার হয় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে।

রাজধানীর কোনো একটি এলাকার অত্যাধুনিক একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। প্রধান ফটকে নিরাপত্তা পাহারা, সিসি ক্যামেরা সবই আছে। আছে ভবনে প্রবেশের আগে খাতায় নাম ঠিকানা লেখার বিধানও।

এমন একটি প্রতিষ্ঠানে ভুয়া নাম পরিচয় ব্যবহার করে সবার সামনে দিয়েই প্রবেশ করে চক্রটির প্রধান নাসির। এরপর কৌশলে যন্ত্রপাতির ব্যাগ নিয়ে ঢুকে পড়ে তার সহকারী মমিন। খুলে ফেলে একের পর এক নিরাপত্তা বেষ্টনী। টাকা ল্যাপটপসহ সটান বের হয়ে আসে তারা। বাইরে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করে চালক মফিজ। আর পাহারায় থাকে জামাল। মফিজই গাড়ি নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে ঘুরে ঘুরে ঠিক করে টার্গেট।

এখন পর্যন্ত রাজধানীর পান্থপথের এনা প্রপার্টিজ, বাংলামোটরের বোরাক টাওয়ার, উত্তরার উইনবিজসহ বেশকটি প্রতিষ্ঠানে চুরির তথ্য পাওয়া গেছে। তবে পুলিশের ধারণা তার অপরাধের সংখ্যা আরো অনেক বেশি।

পুলিশ জানায়, প্রায় দুই দশক আগে জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে চুরি করতো নাসির। সেখানে একবার ধরা পড়লে জামিনে বের হয়ে চলে আসে ঢাকায়।

নাসির বলেন, স্কু ড্রাইভার দিয়ে চাপ দিয়ে গ্লাসটা খুলি। খুলে ভেতরে ঢুকি।

তার এক সহকারী বলেন, আমি ড্রাইভার দিয়ে বাইরে দারওয়ান বা অন্য কোনো লোক আসলে তা ফলো করি।

আরেকজন বলেন, আমার কাজ শুধু ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বা ফোন দিলে অফিসে ঢোকা।

এতো নিরাপত্তার পরও চুরির ঘটনায় হতবাক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। কখনো নিজেদের কর্মীদের সন্দেহ করে দ্বন্দ্বও দেখা দেয় তাদের মধ্যে।

একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব ড্রয়ারে টাকা রাখা হয়েছিল কারো ড্রয়ারে টাকা পাওয়া যায়নি। চারটা ফ্লোরে তারা লক ভেঙেছে। কেচি গেট কেটেছে। প্রতিটি ফ্লোরেই ক্যাশ টাকা ছিল।

পুলিশ বলছে, নাসিরের সহকারী মমিন সোনার বাংলা ট্রেনের টিকেট চেকার, রাহাত গাউসিয়া মার্কেটের দোকান কর্মচারী, মফিজ উবার চালক। নিজ নিজ কাজের আড়ালে এই অপকর্ম করতো তারা।

পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, চুরি কোটি টাকা হতে পারে বা অনেক মূল্যবান ডকুমেন্টস হতে পারে। এক্সিসটিং রিয়েলিটি অনুসারে তাদের কাছে যা পাওয়া যাবে তার প্রেক্ষিতে তাদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয় সেই ব্যবস্থা করা হবে।

পুলিশ জানায়, চক্রের মূলহোতা নাসিরের বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ। জামাল কুমিল্লার, মমিন টাঙ্গাইলের এবং সম্পর্কে চাচা ভাতিজা মফিজ ও রাহাতের বাড়ি গাইবান্ধা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here