আল আমিন, ঢাকা থেকেঃ রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন এলাকা হতে তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী, ২৮ টি মামলার আসামি মোঃ মনোয়ার হাসান জীবন’কে বিদেশী পিস্তলসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, অস্ত্রধারী ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৭/১২/২০২১ ইং তারিখ রাত ২০.৩০ ঘটিকার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ০১ টি বিদেশী পিস্তল, ০১ টি ম্যাগাজিন, ০১ রাউন্ড গুলিসহ ২৮ টি মামলার আসামী নিম্নোক্ত তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী’কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় ঃ
(ক) মোঃ মনোয়ার হাসান জীবন @ লেদু হাসান (৪২), জেলা- লক্ষীপুর।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী মোঃ মনোয়ার হাসান জীবন @ লেদু হাসান ১১ জুন ১৯৭৮ সালে লক্ষীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করে। তার বাবা মৃত হারিছ চৌধুরী একজন কৃষক ছিলেন। ধৃত আসামী ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে সে লক্ষীপুর জেলা হতে তার বাবার সাথে ঢাকায় আসে। সে ২০১০ সালে বহুল আলোচিত ওহিউদুজ্জামান হত্যা মামলায় এজাহার নামীয় আসামী হিসেবে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয় এবং ২০১২ সাল পর্যন্ত হাজত বাস করে। পরবর্তীতে জেল হতে মুক্তি পাওয়ার পর সে আরো বেপরোয়া জীবন যাপন, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজীসহ নানা ধরনের অপকর্মের সাথে যুক্ত হয়। তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর, আদাবর থানাসহ বিভিন্ন থানাতে খুন, বিস্ফোরক সহ উল্লিখিত সংখ্যক মামলা রয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, সে অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো। সাধারণ মানুষের সম্পত্তি দখল, জমি দখল, চাঁদাবাজি, চাঁদার জন্য হুমকি দেওয়া, মাদক ব্যবসা, জুয়ার কারবার প্রভৃতি অপরাধের সাথে সে জড়িত। এলাকায় নতুন কোন ভবনের কাজ শুরু হলে তাকে নির্দিষ্ট পরিমান চাঁদা দিতে হতো। অন্যথায় সে তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে কাজ বন্ধ করে দিতো। আসামী মূলত অস্ত্রধারী হওয়ায় এবং প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ জনগণ তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে সাহস করতো না এবং কেউ তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করলে অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখাতো ও মারপিট করে গুরুতর জখম করতো। তার অত্যাচারে উক্ত এলাকার সাধারণ মানুষ সর্বদা অতিষ্ঠ ও ভীতসন্ত্রস্থ। মনোয়ার হোসেন জীবন ওরফে লেদু হাসান আদাবর এবং মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী। লেদু হাসান ২০১৭ সালে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরে এস আর পলাশকে হত্যা করে। আদাবর থানায় তার বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা চলমান রয়েছে। একটি অস্ত্র মামলায় তার ১০ বছরের সাজা হয়েছে। সে মোহাম্মদপুর বেড়িবাধ এলাকায় একটি গাড়িতে আগুন দিয়ে দুজন মহিলাকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল যে মামলাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন এবং এই ধরনের অপরাধীদের প্ররুদ্ধে র্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।