রাশিদুজ্জামান সরদার, ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধিঃ
এখন সৌদি আরবের সাম্মাম ,ফল খাওয়ার জন্য সৌদি আরব যাওয়া লাগবেনা ,এখন সেটা পাওয়া যাচ্ছে ডুমুরিয়া উপজেলা খর্নিয়া পাঁচপোতা ও কুলবাড়িয়ার কৃষক শফিকুল ইসলামের মৎস্য ঘেরে , মৎস্য চাষের পাশাপাশি মৎস্য ঘেরের আইলে মাচান করে সাম্মাম ফল চাষ করেছেন তিনি । আরো পাওয়া যাবে খর্ণিয়া পাচপোতা বিলের ভেতর সাম্মান চাষি আফজাল মোল্লা’র মৎস্য ঘেরে , আফজাল মোল্লা’র
সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সৌদি আরব-সহ মধ্যপ্রাচ্যে ধুসর মরুভূমিতে ফলা সাম্মাম খুবই জনপ্রিয় ও মূল্যবান ফল। এর বাইরের আবরণ খুব শক্ত হলেও ভেতরে খুবই নরম, অনেকটা পেপের মতো। দেখতে খানিকটা তরমুজ বা বাঙ্গি’র মতো।
পেঁপের মত দেখতে হলেও ফলের গায়ে একরকম জাল-জাল দাগ-সহ সুঘ্রাণযুক্ত সাম্মাম মিষ্টি ফল। গত কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে আসলেও এই প্রথম ডুমুরিয়া অঞ্চলের শ্যামল মাটিতে খুব ভালো ফলন ধরেছে। ইতোমধ্যে এলাকায় অধিকাংশ সবজি চাষি-সহ সর্বস্তরের মানুষের মুখে মুখে সাম্মাম’র নাম ছড়িয়ে পড়েছে। এই ফল দেখতে প্রতিদিন এলাকার চাষি-সহ বেশকিছু মানুষ পাঁচপোতা বিলে যাচ্ছেন। সাম্মাম চাষের ধরণ সম্পর্কে জানা গেছে, বৈশাখ মাসে ঘেরের আইলে অসময়ের তরমুজ, কুমড়া বা লাউ চাষের মতো করে জৈব, টিএসপি ও এমওপি সার দিয়ে ১,৫ ফুট অন্তর মাদা তৈরি করে বীজ রোপন করতে হয়।
কিভাবে এই সাম্মাম চাষে আগ্রহি হলেন, জানতে চাইলে।
আফজাল মোল্লা (৪৫) বলেন, গত ৩ বছর ধরে আমি আমার চিংড়ি ঘেরের আইলে অফসিজন তরমুজ চাষ করে থাকি। চলতি বছর আমরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে লাভজনক নতুন নতুন সবজি চাষের ধারণা পেয়েছি। প্রতি বছরের মতো বীজ কিনতে গেলে উপজেলার চুকনগর বাজারের আল্লার দান বিজ ভান্ডারের প্রোপাইটার মোসলেম উদ্দিন মোড়ল বলেন, তরমুজের পাশাপাশি সৌদি আরবের অনেক সুস্বাদু ও মূলবান ফল ‘সাম্মান’ চাষ করে দেখো, অনেক লাভ পাবে। তার কথা ও কৃষি অফিসের ধারণা মিলিয়ে আমি ১২টাকা দরে ১৫টি বীজ কিনে এনে প্রতি মাদায় ১টা করে বীজ লাগাই। বীজ লাগানোর ৪-৫ দিন পর চারা বের হয়ে ১ মাসের মাথায় গাছ মাচায় উঠে ফুল আসতে শুরু করে। মোট ৭৫ দিনে পাকা ফল কেটেছি। আমার ১৫টা গাছে এ বছর ৪০পিচের বেশি ফল ধরেছে। গত সপ্তাহে খুলনা কাচা বাজার আড়তে ৬০ টাকা কেজি দরে ১৮টি পাকা সাম্মাম বিক্রি করেছি। প্রতিটা ফল গড়ে ৩ কেজি ওজন হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য এই সাম্মাম চাষি তাদের ক্ষেতে হলুদ তরমুজের মতো দেখতে ‘রিয়া’ নামের আরও একটি বিদেশি ফল চাষ করেছে। তারও স্বাদ ও ফলন ভালো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম মুকুল বলেন, সাম্মাম রসালো ও মিষ্টি, তবে অন্যসব ফলের চেয়ে দারুণ স্বাদ। এলাকার সবজি চাষী কৃষক আসাদুজ্জামান লিটন বলেন, আমাদের এলাকায় সৌদি আরবের ফল সাম্মাম ফলেছে শুনে বা দেখে আমরা দারুণ আশাবাদি। ভালো দাম ও স্বাদের কথা শুনেছি। আগামি বছর আমরিও সাম্মাম ফল চাষ করবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সাম্মাম বা রকমিলন এলাকায় সম্পূর্ণ নতুন হওয়ায় আমরা তাদেরকে সব রকম সহয়তা দিয়েছি। এর বিশেষ কোনো পরিচর্যারও দরকার হয়নি। আগামি বছর ডুমুরিয়ায় এর চাষ বাড়বে। আর সাম্মামের আবরণ শক্ত হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করা যায় বলে বিদেশে রফতানির সম্ভবনাও আছে, আমি আশা করছি এই সাম্মাম ফল চাষে আগামী বছর কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে।