নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ নবীগঞ্জে বিজনা নদীর জল মহাল নিয়ে বাশঁডর (দেবপাড়া) গ্রামের দু গ্রæফের লোকের সংঘর্ষে জাহির আলী নামের এক বৃদ্ধ প্রতিপক্ষের লোকদের হামলায় নিহত হন। নিহতের ঘটনার পর জাহির আলীর পুত্র আরশ আলী ৯২ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নবীগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত আমিনুল ইসলাম ঘটনার সাথে জড়িত ২০/২৫ জনকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরন করে। আব্দুল মন্নাফ ছাড়া মামলার সকল আসামী জামিনে এলাকায় চলে আসেন।
এলাকায় আসার পর থেকেই মামলার আসামী ও তাদের পক্ষের লোকজন নিহত জাহির আলীর পরিবার ও তাদের পক্ষের লোকজনের উপর অমানুসিক নির্যাতন ও লুটপাট, বাড়িঘর ভাংচুর শুরু করে। থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা আইনিক কোন সহায়তা পাইনি। পরে নির্যাতিত পরিবারের পক্ষে নিহত জাহির আলীর পুত্র আবুল হোসেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করার পর নবীগঞ্জ থানায় নির্যাতিত পক্ষে ৩ টি ঘটনা একই এজহার করে থানায় মামলা নেয় থানা পুলিশ। মামলা গ্রহনের পর হত্যার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি আমিনুলের পরামর্শক্রমে হত্যা মামলার আসামীরা মিথ্যা একটি ঘটনা সাজিয়ে নিহত জাহির আলীর পরিবারে ৩ পুত্র আরশ আলী, সুবজ মিয়া, আবুল হোসেন তাদের গ্রæপের ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি কাউন্ডার মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা জাহির আলী হত্যা মামলা বাদীসহ আসামীগং এলাকায় না থাকার সুবাধে হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি আমিনুলসহ আসামীগংরা হত্যা মামলাটি ভিন্নখাতে প্রভাহিত করার নীল নকশা তৈরি করেন। ওই নীল নকশার অংশ হিসাবে প্রথমে মিজবাকে গ্রেফতার করে তারপর গ্রামের সামছুল ও জিলুকে গ্রেফতার করে ওসি আমিনুল তাদের ক্রস ফায়ারসহ নানা ধরনের ভয়র্ভীতি প্রদর্শন করে আমার পিতাকে আমাদের পক্ষের লোকজন খুন করি বলে জোর পূর্বক স্বীকাররোক্তি গ্রহন করে। ওই নীল নকশার তৈরি করতে গ্রামে আসামীদের পক্ষের লোকজনের অনুসারীদের নিয়ে বসে গোপন বৈঠক। ওই বৈঠকে যদি আরশ আলী আপোষ প্রক্রিয়া না মানে তাহলে তাকে ও তার পরিবারের লোকজনের হাত পা কেটে ফেলবে এমন কিছু কথা রয়েছে। হত্যা মামলা আপোষ না মানা হয় তাহলে কি করতে হবে কিভাবে মামলার তদন্তকারী দারোগো টাকা দিয়েছিলেন তাদের টাকা দেয়ার পর কাজ কেন হচ্ছে না? দারোগার কাছ থেকে টাকা ফেরত নিয়ে আসাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনার গোপন তথ্য এবং জিলু পরিবারের সাথে আসামীদের আলাপ আলোচনা সকল তথ্যর অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে যাওয়ায় হত্যা মামলার আসামীদের মধ্যে আতংক বিরাজ করচ্ছে। হত্যা মামলা থেকে বাচাঁর জন্য আসামী পক্ষের লোকজনের আয়োজনে গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে হত্যা মামলার একাধিক আসামীর নেতৃত্বে গত ৫ই মে আমার পিতার হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহা সড়কে তারা মানব বন্ধন করেন। ওই মানব বন্ধনের সংবাদ ওসি আমিনুল তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডিতে পোষ্ট করেন। মামলার ন্যায় বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত ওসি আমিনুল আসামীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়ার অভিযোগ এনে পুলিশের হেড কোয়াটার্সে মহা-পুলিশ পরিদর্শক বরাবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরির্বতনের আবেদন করেন হত্যা মামলার বাদি আরশ আলী। বিগত ২০ সালের ১৭ই জুলাই গ্রামের রাজা মিয়া, কাচন মিয়া, বশির মিয়া, মন্নান মিয়া, মনর মিয়া,জয়নাল আবেদিনের পক্ষের লোকজনের হামলায় নিহত হন জাহির আলী। হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি আমিনুল ইসলাম আসামীরা জামিনে চলে আসার পর তাদের প্রথমে হত্যা মামলাটি আপোষ করার চেষ্টা করতে বলেন। তখন স্থানীয় আওয়ামিলীগ নেতা মৎস্যজীবি কমিউনিটি লিডার জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল মালিকসহ মৎস্যজীবি সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতারা ওই ঘটানটি আপোষ প্রক্রিয়ার উদ্দ্যেগ নেন। এসময় তারা উভয় পক্ষের মতামত গ্রহন করে দু পক্ষের লোকজনের নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা করে জামানত হিসাবে নেয়া হয়। আপোষ প্রক্রিয়ার সিদ্ধান্ত হয় প্রত্যক্ষ পক্ষের লোকজন তারা নিজ নিজ উদ্দ্যেগে তাদের মামলা তুলে নিয়ে নিবেন এবং গ্রামবাসী সবাই মিলে মিশে চলার। ওই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি আরশ আলী ও তাদের লোকজন। এরপর থেকেই শুরু হয় হত্যা মামলার আসামী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি আমিনুলের নতুন হিসাব নিকাশ। হত্যা মামলা থেকে আসামীদের বাচাঁতে ওসি আমিনুল হ্নদয় বাদি কাউন্ডার মামলার আসামী হিসাবে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে হত্যা মামলার বাদি আরশ আলীর চাচাতো ভাই মিজবাকে। ওসি আমিনুল মিজবা গ্রেফতার বা আটক নিয়ে নাটক করা ৩দিন পর তাকে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিতে ১৬৪ জবানবন্দি গ্রহন করে তাকে কোর্টে প্রেরন করেন। মিজবাকে গ্রেফতারের পর হত্যা মামলার আসামীগনের সাথে যোগাযোগ মূলে ওসি আমিনুল সামসুল ও জিলু মিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের ও ১৬৪ জবানবন্দি গ্রহন করে কোর্টে প্রেরন করে। ১৬৪ জবানবন্দি গ্রহনের ২ সপ্তাহ মধ্যেই আসামী পক্ষের লোকজন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি আমিনুল ইসলামকে টাকা দেয়ার কথা ও জিলু পরিবারের লোকজনকে আসামীরা ভয়র্ভীতি প্রদর্শন ও টাকার লেনদেনসহ গোপন কথাবার্তার সকল তথ্য অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে গেছে। ওই অডিও রেকর্ড নিয়ে এলাকায় সর্বত্র আলোচনা- সমালোচনার ঝড় বইচে।
মোঃ হাসান চৌধুরী
নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি