যশোর প্রতিনিধি – যশোর আলোচিত ৬ শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার মামলার আসামি আমিনুর রহমানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।আজ বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক টি এম মুসা আজ দুপুরে এ রায় দেন। এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও নির্যাতিত শিশুদের শিক্ষকরা। দণ্ডিত আমিনুর রহমান যশোর শহরের খড়কি পীরবাড়ি এলাকার হানেফ মিয়ার ছেলে।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. ইদ্রিস আলী জানান, যশোর শহরতলীর খড়কি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থী এক মাসেরও বেশি সময় ধরে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছিল। গত ২৮ এপ্রিল ৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ায় খোঁজ নিতে গিয়ে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষের সামনে আসে। তারা জানতে পারেন স্কুল সংলগ্ন এলাকার তিন কন্যা সন্তানের জনক আমিনুর রহমান এক প্রতিবন্ধী শিশু এবং ঐ ৫ শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে ফেরার সময় নানা খাবার দেবার প্রলোভন দিয়ে একটি বাগানে নিয়ে যেত এবং ধারালো অস্ত্রের মুখে যৌন নিপীড়ন চালাতেন। একইসাথে মুখ বন্ধ রাখতে পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিতেন।সর্বশেষ গত ১ মে স্কুল কর্তৃপক্ষ নির্যাতিত মেয়ে ও তাদের অভিভাবকদের ডেকে এনে জিজ্ঞাসবাদ করলে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি প্রকাশ পায়। এরপর এক নির্যাতিতের বোন বাদী হয়ে ৪ মে কোতোয়ালী থানায় আমিনুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আমিনুরের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। এর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজ বিচারক আমিনুরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষণা শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।এদিকে দ্রুত সময়ে রায় হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও নির্যাতিত শিশুদের শিক্ষকরা। বাদী আসামি পক্ষের দ্বারা আক্রোশবশত হামলা ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের স্কুল শিক্ষক শেফালি রানী সরকার বলেন, আসামিদের সাজার কথা আমরা শুনেছি। দ্রুত সাজা হওয়ায় আমরা খুশি। এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। মামলার পিপি অ্যাড. ইদ্রিস আলী বলেন, দ্রুততম সময়ের শাস্তি হওয়ায় এটি একটি দৃষ্টান্ত হলো। যারা এ ধরণের মানসিকতায় অভ্যস্ত তাদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হবে।