ত্রিবার্ষিক এই নির্বাচনে মোহিতকুমার নাথ ও শাহারুল ইসলাম সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে, শহরের নেতৃত্বে এসেছেন অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ ও মাহমুদ হাসান বিপু।
শনিবার আওয়ামী লীগের এই দুই ইউনিটের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বিবদমান দুই পক্ষের নেতাদের নিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচরেন প্রাথমিক চেষ্টা করেন। কিন্তু কাউন্সিলরদের দাবির প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতারা নেতা নির্বাচনে কাউন্সিলরদের গোপন ব্যালটে রায় প্রদানের ব্যবস্থা করেন। আগে থেকে প্রস্তুত করা যশোর পৌর কমিউনিটি সেন্টারের ভোট বুথে বিকেল তিনটার পর শুরু হয় যশোর সদর উপজেলা ও শহর কমিটির নেতা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আব্দুর রহমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আবু সাঈদ আল-মাহমুদ স্বপন এবং কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল হোসেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নির্বাচনে সদর উপজেলা ইউনিটের ৫৪৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৫৩৪ জন ভোট দেন। নির্বাচনে সভাপতি পদে দুইজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে নির্বাচন কমিশনের প্রধান আব্দুর রহমান বাকি দুই কমিশন সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ফলাফল ঘোষণা করেন। এই নির্বাচনে ২৯০ ভোট পেয়ে মোহিতকুমার নাথ সভাপতি পদে আবার দায়িত্ব পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মিন্টু পান ২৩৬ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়নে পরিষদ চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম সর্বাধিক ৩০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মিলন পেয়েছেন ২২০ ভোট।
এদিকে যশোর শহর আওয়ামী লীগের ২৫৩ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২৪৩ জন ভোট দেন। এতে ১৪৬ ভোট পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ সভাপতি নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল হোসেনের প্রাপ্ত ভোট ৯৭।
সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ হোসেন বিপু ১১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী লুৎফুল কবির বিজুর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৭৭।
এছাড়া এই পদের অপর প্রার্থী আজহার হোসেন স্বপন পেয়েছেন ৪৯ ভোট।
শনিবার যশোর সদর উপজেলা ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে যারা জয়লাভ করেছেন, তারা সবাই জেলা সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারপন্থী হিসেবে পরিচিত। আর পরাজিতরা মূলত যশোর সদর আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারী।
দলটির নেতারা বলছেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে জেলার রাজনীতিতে শাহীন চাকলাদারের প্রাধান্য আরো বাড়বে।
এদিকে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর বিজয়ী প্রার্থীদের অনুসারীরা তখনই শহরে আনন্দমিছিল করেন।
বিজয়ী প্রার্থীরা নির্বাচনে তাদের পক্ষে রায় দেওয়ার জন্য কাউন্সিলরদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।