স্টাফ রিপোর্টারঃ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার রাজারডুমুরিয়া বাজার সংলগ্ন সরকারি খাস জমিতে পুকুর খননসহ দীর্ঘদিন ধরে জোর করে দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ওই গ্রামবাসী খাস জমিতে পুকুর খনন বন্ধসহ পুনরায় ভরাট করে দখল মুক্ত করতে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ সহ গণস্বাক্ষরের কাগজ পত্রাদি জমা দিয়েছেন।
এদিকে অভিযোগ পত্রটি জমা দেওয়ার বয়সসীমা এক মাস পার হওয়ার উপক্রম হলেও এখনো পর্যন্ত কোন সুরাহা না হওয়ায় চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজারডুমুরিয়া গ্রামের বাজারের ব্রীজ সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বে ওই গ্রামের মৃত ঈমান আলী সরদারের ছেলে নাছের আলী সরদারের একটি নিজস্ব জমি রয়েছে।পাশেই বেতনা নদীর কোল ঘেঁষে ২৪২ দাগের ১১৪ নং মৌজায় ৩৭ শতক সরকারের খাস জমি রয়েছে। যে জমিটি দীর্ঘদিন যাবৎ স্থানীয়ভাবে জনসার্থে গ্রামীন বাজারের কাঁচা বাজার হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।ইতোপূর্বে বেশ কিছু বছর আগে জায়টা নিয়ে ঝামেলা হলে বাজারটি অন্য এক ব্যক্তির মালিকানা জমিতে অস্থায়ী ভাবে গড়ে ওঠে। তখন থেকে অভিযুক্ত নাছের আলী সরদার প্রভাব খাটিয়ে ঔ খাস জমিটি জবরদখল করে আসছেন।
সম্প্রতি নাছের আলী সরদার রাজারডুমুরিয়া বাজারে তার জমিতে মার্কেট তৈরীর কাজ শুরু করেছেন। যেখানে ব্যবহৃত মাটি তিনি সরকারি খাস জমিতে পুকুর খনন করে মাটি ভরাটের কাজ করেছেন। যার ফলে বাজারের অন্য দোকানপাট এবং জনবসতি হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোন মুহূর্তে পাকা রাস্তা, পুকুর, ঘর বাড়ি বৃষ্টির পানির চাপে ভাঙ্গনের কবলে পড়বে।
অভিযোগ পত্রে গ্রামবাসীর পক্ষে স্বাক্ষরকারী ৮ নং নির্বাসখোলা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলমগীর হোসাইন বলেন,নাছের আলী বাজার সংলগ্ন ৩৭ শতক সরকারি খাস জমি দখল করে পুকুর কেটে ৩শ ট্রাক মাটি উত্তোলন করেছেন।যে মাটি দিয়ে তিনি দোকান ঘর ভরাট করেছেন। তার আগে তিনি উল্লখিত জমিতে থাকা ২৫ টি শিশু ও মেহগনি গাছ কেটে বিক্রি করেন নাছের আলী। এবং খননকৃত পুকুরটি ৩০ হাজার টাকা লিজ বাবদ গ্রহণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন অভিযোগ পত্রে।
সরকারের খাস জমি রক্ষার্থে এবং স্থানীয় জনসাধরণের সুবিধার্থে খাস জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করে কাঁচা বাজারটি আগের স্থানে স্থানান্তর করার জন্য জোর দাবি জানান রাজারডুমুরিয়া গ্রামের শত শত মানুষ।
নির্বাসখোলা ও হাজিরবাগ ইউনিয়নের উপ-সহকারী কর্মকর্তা(ভুমি) জাকির হোসেন বলেন, খাস জমিতে পুকুর খনন করছে এমন খবর পেয়ে তাত্ক্ষণিক ভাবে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং আর না কাটতে নিষেধ করে আসি। পরবর্তীতে নিষেধ অমান্য করে আবারো সে পুকুর খনন করেছে। অভিযুক্তের নামে মামলা দিয়ে উপর মহলে শাস্তির দাবি করবো।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নাছের আলী সরদারের কাছে জানতে তার মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল হক গ্রামবাসির দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, খাস জমি দখল করে পুকুর খনন করা দন্ডনীয় অপরাধ। দ্রুত বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।