জুলফিকার আলী, কলারোয়া থেকেঃ সেবাই পুলিশের ধর্ম। পুলিশের কাজ কি এক কথায় বুঝাতে গেলে তাই বলা হয়। কিন্তু আইন ও বিধিমালা দ্বারা
পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত পুলিশের কাজ মূলত অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা।আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছেন যাদের মধ্যে পুলিশকে
নিয়ে একটা ভ্রান্ত ধারণা কাজ করে সব সময়। কিন্তু এমন কিছু পুলিশ অফিসার
রয়েছেন যাদের সাথে না মিশলে বুঝাই মুশকিল একজন পুলিশ অফিসার এতটা সাদা
মনের মানুষ হতে পারে। যার দক্ষতা, কর্তব্য নিষ্ঠা, সাহসিকতা ও সততায়
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলাবাসী পূর্বের ন্যায় নির্ভয় শান্তিতে বসবাস
করছেন। আর তিনি হচ্ছেন কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নাছির উদ্দীন মৃধা।
তিনি কলারোয়া থানায় যোগদান করার পর থেকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব
পালন করে চলেছেন। যার কারনে মাদক কারবার, কিশোর অপরাধ এর মত অপরাধগুলো
নিয়ন্ত্রণে তিনি পুরোপুরি ভাবে সফল হয়ছেন। এলাকায় জুয়াড়ীদের ধরে চালান
করেছেন। বহু মামলা দিয়ে জুয়া খেলা বন্ধ করে দিয়েছেন। ওসি নাছির উদ্দীন
মৃধার পেশাদারিত্বের কারণেই থানার সার্বিক চেহারাই পাল্টিয়ে গেছে।
কলারোয়াবাসী ওসির কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট বলে জানা য়ায়। ওসি নাছির উদ্দীন
মৃধা অত্যন্ত পরিশ্রমী ও মেধাবী অফিসার বলে জানা গেছে। প্রতিদিন তিনি
সকাল থেকে থানায় উপস্থিত থাকেন এবং গভীর রাতঅবধি থানা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা
পর্যবেক্ষণ করেন এবং সকল অফিসারদের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। সম্প্রতি
কলারোয়ায় আইনশৃঙখলা মাসিক মিটিং এর গামা শহিদুল ইসলাম নামে এক যুবকের নাম
উঠে আসে। শহিদুল দীর্ঘ ৪০বছর ধরে কলারোয়ায় টাকা দিয়ে তাস খেলা করে আসছে।
থানা পুলিশ এমন সংবাদ পেয়ে গামা শহিদুলকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
তিন্তু সে জেল হাজত থেকে ফিরে এসে গোপনে তার পুরানো পেশায় চলে যায়। পরে
কলারোয়া থানার মানবিক পুলিশ অফিসার নাছির উদ্দীন মৃধার সততার জ্বালে সে
আটকে পড়ে জুয়াড়ী গামা শহিদুল। টাকা দিয়ে থানার মেইন গেটের সামনে একটি
দোকান করে দেন তাকে। আর সেই দোকানে বসে যা আয় হয় তা দিয়ে গামা শহিদুল
ইসলামের সংসার ভাল ভাবে চলে। নামাজও পড়েন গামা শহিদুল। শহিদুল ইসলামের
কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন-আমি আর কোন দিন জুয়া খেলার কথা মুখে
আনতে চাইনা। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে আমি জুয়া খেলা করছি। আমাকে কখনো কেউ ভাল
কাজ, ভাল কথা বলেনি। কলারোয়া থানার ওসি স্যার আমাকে একটি দোকান করে দিয়ে
আমার ও আমার পরিবারকে বড় উপকার করেছেন। তার কথা কখনো ভুলবো না। আল্লাহর
কাছে সর্ব সময় দোয়া করি যেন ওসি স্যার ভাল থাকেন। নাছির উদ্দীন মৃধার মত
পুলিশ অফিসাররাই পারেন পুলিশ বাহিনীর সুনাম ও সম্মান বৃদ্ধি করতে। আর এই
সততা ও নিষ্ঠার সাথেই বাকিটা সময় পার করতে চান। কলারোয়া থানার অফিসার
ইনচার্জ নাছির উদ্দীন মৃধা জানান, পুলিশ জনগণ নিয়ে কাজ করে, পুলিশ
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি অনেক মানবিক কাজ করে থাকে, অতীতেও করেছে, যা
হয়তো এখন আরও বেশি দৃশ্যমান। আমরা জনগণের খুব পাশে যেতে চাই। সেই
ধারাবাহিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে দরিদ্র অসহায় জুয়াড়ী গামা শহিদুল ইসলামকে
দোকান করে দিয়েছি। আমি মানুষের জন্য ব্যতিক্রম কিছু করে যেতে চাই।