ফিরোজ জোয়ার্দ্দার-ঃ সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী জিএম মনজুর মোর্শেদ তুষারের উপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ডান হাতের কব্জি কেটে নেয়ার ঘটনায় পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত মুল হোতা বিলুপ্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ নাইচ, শেখ সাগর হোসেন, শেখ পলাশ, নূরুল কবীর বাবু, মন্টু ও রিজুসহ এজাহার নামী আসামীদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করতে পারিনি। গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ জনগণ। ঘটনার পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও কি কারণে মুল হোতাদের গ্রেফতার করা হয়নি সে বিষয়ে তেমন কোন সঠিক উত্তর দিতে পারে নি থানা পুলিশের এস আই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন। তবে আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রেখেছেন বলে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এমটাই জানালেন তিনি। এদিকে সূধীজন বলেছেন, পবিত্র রমজান মাসে কলারোয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে নেক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিলো হাত কাটা ছাত্রলীগ নামের এসব সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পর থেকে তারা পলাতক থাকলেও বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামীদের অবস্থান সনাক্ত করা যেতে পারে। কিন্তু পুলিশের গাফিলতির কারণে এ সকল আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। যদি পুলিশ ইচ্ছা করে তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামীদের অবস্থান সনাক্ত করে গ্রেফতার করতে পারতেন। কিন্তু কোন কারণে আসামীদের গ্রেফতার করছেন না সেটা পুলিশ বলতে পারবেন। তাছাড়া এমন জঘন্য ঘটনার পিছনে কারা মদদদাতা বা কার শেল্টারে এমন কাজ ঘটলো বা এদের পিছনে কোন শক্তি কাজ করছে এসব বিষয় নিয়ে আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীকে তদন্ত করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যদি নেক্কার জনক ঘটনাটি ধরাশরি হয়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষ আইনের প্রতি আস্তা হারিয়ে ফেলবেন। তাই অতিদ্রুত মুল হোতাসহ সকল আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশকে আহবান করেন। এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রগুলো বলছে, মুল হোতাসহ সকল নামধারী আসামীরা আত্নগোপনে থেকে প্রতিনিয়ত তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। আইন- শৃঙ্খলা বাহিনী যদি সে দিকে লক্ষ্য রাখেন তাহলে আসামীদের গ্রেফতার করতে সম্ভব হবে। বিশ্বস্ত সূত্রে আরা বলেন, কলারোয়া আওয়ামীলীগের হাইব্রিড এক নেতার মাধ্যমে আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। যদিও আসামীরা প্রকাশ্য না থাকায় গোপনে তাদের মামলা থেকে রেহাই দেয়াও তদবির চালানো হচ্ছে বলে জানা যায়। আসামীরা যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে তারা রক্ষা পাবে না। তাদের অতিদ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে নিশ্চিত করেন থানা পুলিশ। এদিকে এজাহারনামী মুল আসামীদের ধরতে কলারোয়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষনা করা হয়েছে। যদি কেহ আসামীদের ধরিয়ে দিতে বা সন্ধান দিতে পারেন তাহলে তার তথ্য গোপন রেখে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানান অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। উল্লেখ গত ১৮ ই মে শনিবার বেলা ১১টার দিকে কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম তুষারের উপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে তার ডান হাতের কব্জি কেটে নেয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তুষারকে সেই দিন হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় আল মাদান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে আহত তুষারের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা যায়। এই ঘটনায় তার চাচা আবু সিদ্দিক বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে হত্যা প্রচেষ্টা মামলার ১নং আসামী দিগং গ্রামের রেজাউল ইসলামকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। আর মুল হোতাসহ বাকী আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে আত্নগোপন করে রয়েছেন। তবে বাকী আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রেখেছেন থানা পুলিশ।