ফিরোজ জোয়ার্দ্দার-ঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ২৯ সদস্যকে আটক করেছে র্যাপীড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা। শুক্রবার (২৫ মে) সকালে থানার পাশ্ববর্তী মেন রাস্তার ধারে একটি ভবনে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের উত্তর ঠিক করার কাজে নিয়োজিত অবস্থায় পরীক্ষার্থী ও প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের এসব সদস্যকে আটক করা হয়। র্যাব-৬ সাতক্ষীরা সিপিসি কমান্ডার লেফটেন্ট মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে আগ্রহী পরীক্ষার্থীরা জড়ো হয় পৌরসদরের সোনালী সুপার মার্কেট ভবনের কীডস ক্লাব সেন্টারে। তারা সেখানে রাত্রী যাপন করেন। তিনি আরও জানান, রাতভর এবং সকালে মোবাইল ফোনে তাদের কাছে আসা প্রশ্নপত্র ব্লাক বোর্ডে লিখে সাথে সাথে তার উত্তরও নির্দেশ করা হতে থাকে। অংশ গ্রহনেচ্ছুরা তা শিখে নিতে থাকেন। এমন খবর পেয়ে র্যাব সদস্যরা ভবনটি ঘিরে ফেলে। সেখান থেকে প্রথমে ২২ জন পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও ৭ জন সহ ২৯ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে একজন ব্যাংক কর্মকর্তাও রয়েছেন। র্যাব জানায়, তারা জানতে পেরেন যে ঢাকার ফামগেট এলাকায় বসে একটি প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে আটকদের কাছে মোবাইল ফোনে প্রশ্ন ও তার উত্তর বলে দেবে। এসব প্রশ্ন ও উত্তর ব্লাক বোর্ডে লিখে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া দেবে। এ জন্য সিন্ডিকেটের হাতে অগ্রীম পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকী টাকা পরীক্ষা শেষে দেওয়ার কথা রয়েছে। আটক প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ২৯ জনের মধ্যে ২১ জনকে দুই বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর বাকী ৮ জনকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রশ্ন পত্র ফাঁস চক্রের দন্ড প্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার পরানখালী গ্রামের আব্দুল হালিম (৩৯), সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ঝাপাঘাটের আফতাবুজ্জামান (৩৫), একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম (৩৫), আশাশুনির চেউটিয়া গ্রামের মনিরুল ইসলাম (৩৫), কাকবাসিয়া গ্রামের তরিকুল ইসলাম (৩৫), কুন্দড়িয়া গ্রামের সুমেন্দ্র ঘোষ (৩০), শ্যামনগরের গোবিন্দপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান (৩৫), একই গ্রামের আব্দুল হালিম (২৩), হুমায়ুন কবীর (২৭), আশাশুনির লাউতাড়া গ্রামের সন্নাসী কুমার সরকার (২৮), কাকবাসিয়া গ্রামের রিয়াছাদ আলী (২৯), চেউটিয়ার দিদারুল ইসলাম (৩০), সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাছিমপুরের বিশ্বজিৎ ঘোষ (৩০), আশাশুনির প্রতাপনগরের সাইফুল্লাহ (২৯), শ্যামনগরের গোবিন্দপুরের সানজিদা বকুল (১৯), আশাশুনির মহিষকুড়ের নাজমুন নাহার (২৯), কল্যাণপুর গ্রামের রাবেয়া (২৫), চেউটিয়া গ্রামের সেলিনা খাতুন (২৬), তুয়ারডাঙ্গার তানিয়া সুলতানা (২৬) ও গোকুলনগরের সুমাইয়া খাতুন (২২) ও সদর উপজেলার রসুলপুরের মুস্তারিয়া (২১)।আশাশুনির রইচ উদ্দিনের ছেলে স্কুল শিক্ষক তরিকুল ইসলাম এই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের মূল হোতা।
তাদের কাছে প্রাপ্ত প্রশ্নের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে হুবুহু মিল পাওয়া গেছে।