আজিজুল হক নাজমুল (কুড়িগ্রাম) – কুড়িগ্রামে বোরো ধানচাষে লোকসান। কুড়িগ্রামে বোরো ধানচাষে লোকসান গুণতে হচ্ছে কৃষককে। একমন কাচা ধান বেচে একজন শ্রমিকের মজুরী দিতে গিয়ে ফতুর অবস্থা তাদের। ফলে চলতি মৌসুমে বোরোর ফলন ভাল হওয়ার পরও হাসি নেই কৃষকদের চোখে-মুখে। ধারদেনা করে ধানচাষ করে বাজারমূল্য না পেয়ে হতাশ তারা। এখন থোকা থোকা সোনাফলা ধান বিষাদে পরিণত হয়েছে। সরকার দ্রুত প্রণোদনা ও বাজারমূল্য বৃদ্ধি না করলে কৃষক উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে বোরোচাষে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে কুড়িগ্রাম জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৮২ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৯১ হেক্টর। ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিক টন। যা ৫ হাজার মেট্রিকটন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি বছর আবহাওয়া বিরুপ আচড়ন করলেও ফলনে কোন বিপর্যয় ঘটেনি। মাঠ জুড়ে সোনালী ধান দেখে কৃষকের মন-প্রাণ ভরে গেলেও ধান কাটতে গিয়ে বিপাকে পরেছে তারা। একদিকে শ্রমিক সংকট, অতিরিক্ত খরচ এবং কাচাধানের মূল্য সাড়ে ৪শ’ টাকায় নেমে যাওয়ায় ধান বিক্রি করে খরচ মেটাতে পারছে না তারা। কাঁঠালবাড়ীর শিবরাম এলাকার কৃষক হাছেন জানান, ‘যে ঋণটা করছি। ধানের ফলন দেখিয়া মনে করছি যে ধান বিক্রি করিয়া ঋণটা শোধ করমো। কিন্তু ্ঋণতো শোধ করা দূরের কথা আরো ঋণ করিয়া ধান কাটা নাগে। বাজারেতো কেউ ধান নেয় না। ঋণতো শোধ হবে না, আরও বাড়তি ঋণ হবে।’ হলোখানার কৃষক রুহুল আমিন জানান, ‘সরকার ১ হাজার ৪০ টাকা রেট নির্ধারণ করে দিলেও পাবলিক তো পায় না। এক বিঘা জমিতে ধান গাড়া থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা খরচ লাগে। সেখানে ফলন পাওয়া যায় প্রায় ২০ মন। যার এই মূহুর্তে বাজার মূল্য ৯ হাজার টাকা। এমন লোকসান হলে কৃষক ধান আবাদ করবে না। কাচা ধান যদি বাজারে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা মন না হয় তাহলে কৃষক বাঁচবে না। এবার যে পরিস্থিতি তাতে কৃষক মরে যাওয়ার মতো অবস্থা।’ ইতোমধ্যে একমন ধানে শ্রমিক নিতে গিয়ে নিজেরাই ধান কাটতে লেগেছেন অনেক কৃষক। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক ড. মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এবার বাম্পার ফলন হলেও কৃষক ধানের মূল্য পাচ্ছে না। ধানের মূল্য অনেক কম। এর কারণে কৃষকেরা ধানচাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। ধানের মূল্যটা আসলে পাওয়াটা জরুরী