কুড়িগ্রামে দোতরা,একতারা,সারিন্দা, খমক, খাপিবাদ্য বিলুপ্তির পথে

0
3

মোঃ আজিজুল হক নাজমুল –
কুড়িগ্রাম, প্রতিনিধিঃ
দোতরা, একতারা, সারিন্দা, খমক খাপিবাদ্য বর্তমান প্রজম্মের ছেলে ও মেয়েরা শুধু বইয়েই পড়েছে কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এক সকল যন্ত্রের সাথে তারা তেমন সুপরিচিত নয়। এক সময়কার গ্রাম বাংলার সাড়া জাগানো ভাওয়াইয়া কুষানগান পালাগান। বাউল যাত্রাপালা কিংবা কুষাণ গানের আসরে ছন্দ দিতো এসব দেশীয় বাদ্যযন্ত্র কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে এ সকল লোকজ সাংস্কৃতির অনুষঙ্গগুলো।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ঘুরে দেখা যায় যে, দোতরা, একতারা, সারিন্দা, খমক খাপি, বেনা ও সারিন্দা বাদ্যযন্ত্র গুলো শুধুই বইয়েই সীমান্তদ্ধ। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন আকাশ সংস্কৃতি আর পৃষ্ঠপোষকতায় অভাবে লোকজবাদ্যের ঐতিহ্য আজ বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে। যেখানে জায়গা নিচ্ছে পাশ্চত্যের যন্ত্র। এতে করে নতুন প্রজন্ম নিজেদের লোকজ সংস্কৃতি চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি গ্রামবাংলার প্রাণের গান হারাচ্ছে নিজস্বতা। দোতরার বাউল আর একতার মধ্যে বাঙ্গালিয়ার স্বাদ পাওয়া যায় এ বাদ্যে। গ্রামবাংলার প্রতিটি গানের দলেই দোতরা, একতারা ও বাদক থাকতো অনেক সময় মূল শিল্পীরাই বাজাতে এটি। প্রচলিত আছে, প্রাচীন বাংলায় প্রথম দোতরার উৎপত্তি। বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, আসামেও লোকজ গানের প্রচলন ছিল। দোতরার দুইটি বা তিনটি তারই মূখ্য। তবে উত্তর বঙ্গের রাজবংশী শিল্পীদের কোথাও ২,৪,৫,৬ টি তার থাকার কথা শোনা যায় কিন্তু গানে তাল দেয় দুইটি তারই। কুষান পালাগান ও ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী শ্রী রামানন্দ রায়(৭০) বলেন- মুলতঃ ১৫০০-১৬০০ শতাব্দী থেকে বাউলদের মাধ্যমেই ১০ প্রচলন।

কুষাণ, ভাওয়াইয়া ছাড়াও বাউল গানে রসত বা তাল দিয়ে আদি কাল থেকে গ্রামবাংলার মানুষকে মোহিত করে আসছে। কাঁঠাল বা নিম বা শক্ত কাঠ দিয়ে দোতরার মুল বডি তৈরী। যা দেখতে অনেকটা গোল আকৃতির । আর ফিঙ্গার বোড বানানো হয় স্টীল কিংবা ব্রাশ (পিতল) দিয়ে। আবার মুল বডিতে কিছু অংশে থাকে চামড়া। দোতরার মাথাটি (মুয়ুর)-এর মাথার আকৃতিতে বানানো হয় আর করা হয় কারুকার্য ও। শিল্পী শ্রী রামানন্দ রায়(৭০) বলেছেন- বর্তমানে অধুনিক বাদদের অনুপ্রবেশে দোতরার ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে। শিল্পীরাও পেশা বদল করে চলেছে জীবিকার প্রয়োজনে। তবে এগানের নিজস্বতা আর ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে প্রয়োজনী পৃষ্ঠপোষকতা দরকার বলে তার মত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here