সাংবাদিক আরিফুলকে নির্যাতন। সাবেক জেলা প্রশাসকসহ জড়িতদের শাস্তির দাবিতে কুড়িগ্রামে মানব বন্ধন

0
0

আজিজুল হক নাজমুল – কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন কর্তৃক সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে হত্যা চেষ্টা ও নির্যাতনের মামলায় এক বছরেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেয়ায় কুড়িগ্রামে মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার দুপুরে শহরের শাপলা চত্তরে মানব বন্ধনের আয়োজন করে সংবাদিক সমাজ ও সুধিজন। এতে বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বিপ্লব, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ভৌমিক, এনটিভির সাংবাদিক অধ্যাপক
হাসিবুর রহমান হাসিব, একাত্তর টিভির সাংবাদিক রাজু মোস্তাফিজ, সাংবাদিক গোলাম মওলা সিরাজ, রাশেদুল ইসলাম, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক দুলাল বোসসহ অন্যান্য সাংবাদিক ও সুধিজন।
বক্তারা কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে হত্যা চেষ্টা ও নির্যাতনে জড়িত সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনসহ
জড়িতদের দ্রত বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের নামে জেলা প্রশাসনের একটি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ
প্রকাশের জেরে গত বছর ১৩ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে (১৪ মার্চ) সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে তার নিজ বাড়ি থেকে ঘরের
দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। এরপর তাকে এনকাউন্টারে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জেলা শহরের ধরলা
বিজ্রের পূর্ব পারে নেওয়া হয়। পরে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্মম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন ওই সময়ের আরডিসি নাজিম উদ্দীন,
এনডিসি রাহাতুল ইসলাম ও মোবাইল কোর্টের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমাসহ জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা। পরে সাংবাদিক আরিফের কাছে আধা বোতল মদ ও
দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ এনে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। মধ্যরাতে বাড়ি থেকে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে সাজা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

গণমাধ্যমে এ ঘটনা ফলাও করে প্রচার হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় পরদিন ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার
(রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম
উদ্দিন ও সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে।

গত বছরের ১৫ মার্চ পরিবারের আবেদন ছাড়াই আরিফকে জামিনের ব্যাবস্থা করে জেলা প্রশাসন। কারামুক্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তৎকালীন জেলা
প্রশাসক সুলতানা পারভীনসহ তিন নির্বাহী ম্যাজি‌স্ট্রেট আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এসএম রাহাতুল ইসলামসহ অজ্ঞাত ৩৫/ ৪০ জ‌নের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় এজাহার দায়ের ক‌রেন সাংবা‌দিক আরিফ। প‌রে হাইকোর্টের নির্দেশে ৩১ মার্চ সেই মামলা রেকর্ড ক‌রে
কু‌ড়িগ্রাম সদর থানা পু‌লিশ। মামলার নম্বর-২৪, জি আর নম্বর-
৮৩/২০২০ (কুড়ি)।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here