আজিজুল হক নাজমুল –
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
প্রকৃতির অমোঘ অাগমন বার্তায় অনুভূত হচ্ছে শীতের ঠান্ডা ভাব। অাবার ভোরের মিষ্টি অালোয় ফসল ও ঘাসের উপর ছড়ানো শিশিরের হাজারো বিন্দু মুক্তো দানার মতো চিকচিক করছে। গ্রাম ও শহরেও শীতের অাবহাওয়া বইছে। বাংলার গ্রামীণ জনপদেও শীত হাজির হয় নানান বৈচিত্রের সম্ভারে। শহর-বন্দর ও গ্রাম নতুন অাঙ্গিকে সাজে। মাত্রা পায় খাবার দাবারেও। গ্রামগঞ্জের মত শহরের বাড়ীতে বাড়ীতে পিঠা পুলির পসলা না বসলেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঠিকই মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দোকান নিয়ে বসেন। শীতে পিঠা খাওয়ার রীতি যেন বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির অংশ। শীত অাসলেই যেন গ্রাম-গঞ্জে পিঠা- পুলি তৈরির ধুম পড়ে য়ায়।
এবারের শীতকেও সামনে রেখে কুড়িগ্রাম জেলার পাড়া-মহল্লা ও বিভিন্ন রাস্তার পাশে ইতোমধ্যেই পিঠার দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন পিঠা বিত্রুেতারা। কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন বাজারের ফুটপাতের দোকানগুলোতে জমে উঠেছে পিঠা বিত্রুি। সন্ধ্যার পরে পরেই এসব বাজারে অস্থায়ী দোকানগুলোতে ধোঁয়া উঠা ভাপাপিঠার স্বাদ নিতে ভীড় করেন নানান বয়সের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। বাজারের অলিগলি রাস্তার মোড়ে মোড়ে এই শীতে পিঠা খাওয়া ও বিত্রুির ধুম পড়ে গেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০-১১টা পর্য়ন্ত পিঠা বিত্রুি ও খাওয়া সরেজমিনে কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে, পাড়া, মহল্লা ও বাস স্ট্যান্ডে দেখা গেছে পিঠা বিত্রুির ধুম।কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পিঠা বিত্রুেতাদের সাথে কথা বলে জানা য়ায়, দোকানগুলোতে পিঠা বলতে বেশীর ভাগই পাওয়া য়ায় ভাপাপিঠা। নাগেশ্বরীর পিঠা বিত্রুেতা মানিক মিয়া( ৫৬) জানান নতুন খেজুরের গুড় ও নতুন চাল দিয়ে ভাপাপিঠা বানানো হয়। ফুলবাড়ী উপজেলার পিঠা বিত্রুেতা অাজিজুল হক( ৪২) বলেন, গরম পানির তাপে বা ভাপে এই পিঠা তৈরি হয় বলে একে ভাপাপিঠা বলে। এই পিঠাকে অারও সুস্বাদু এবং মুখরোচক করতে নারকেল অার গুড় ব্যবহার করা হয়। এই পিঠা তৈরি করতে ১টি পাতিল ও ১টি ঢাকনা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ ধরনের পিঠা মানভেদে ৫-১০ টাক্য় বিত্রুি করা হয়। শাহবাজারের পিঠা বিত্রুেতা শোবান ব্যাপারী জানান, অন্যান্য সময়ে তিনি দিন মজুরের কাজে ব্যস্ত থাকেন কিন্তু শীতের সময় তিনি পিঠা বিত্রুি করে থাকেন। এছাড়াও লাভ ভালো হয়। এ ব্যবসায় অল্পপুঁজি লাগে বলে তেমন সম্যাসা হয় না। কোন কোন দিন হাজার টাকাও লাভ হয় বলে জানান তিনি। এই পিঠার দাম কম হওয়ায় সব শ্রেণি পেশার মানুষই এখানে এসে ভীড় জমান পিঠা খেতে। অাবার অনেকেই পিঠা কিনে নিয়ে য়ায় বাসার সবাই মিলে এক সঙ্গে খাওয়ার জন্য। এখানে পিঠা খেতে অাসা সাংবাদিক , নুরনবী মিয়া ও অাজিজুল হক নাজমুল জানান, শীতের সাথে পিঠার যে সম্পর্ক তা ভাপাপিঠা মধ্যেই বোঝা যায়। আর বন্ধুদের সাথে নিয়ে ভাপাপিঠা খেতে মজাই অালাদা। রোজদিনেই তারা এখানে পিঠা খেতে অাসেন বলে জানান তারা।