মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ১৫ বিঘা জমির একটি মৎস্য ঘের দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে জিউধরা ইউনিয়নের বাইনতলা গ্রাামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত আব্দুল খালেক হাওলাদার, শহিদুল ইসলাম, হালিম হাওলাদার, হানিফ হাওলাদার, কাদের হাওলাদার, মানিক হাওলাদার, শাহিনুর বেগম, মিরাজ মল্লিক, মুরাদ হাওলাদার, রবিউল ইসলাম, আব্বাস ফরাজী, সালাম হাওলাদার, নুর মোহাম্মদ শেখ, হাফিজা বেগম, রুবি বেগম, সেলিনা বেগম, চয়ন হাওলার, জাকির শেখকে, রাজু খান, রাকিব শেখ, রুম্মান ও ইমরাজকে মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদের মধ্যে গুরুতর জখমী ও হাত-পা ভাঙ্গা অবস্থায় খালেক হাওলাদার(৬৫), হালিম হাওলাদার(৫৪), হানিফ হাওলাদার(৫০), কাদের হাওলাদার(৬০), মানিক হাওলাদার(৬০) ও মুরাদ হাওলাদারকে(১৪) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। থানা পুলিশ ও এমপির নিকট লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরেও ঘেরটি নিয়ে বড় ধরণের মারপিটের ঘটনা ঘটায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বাইনতলা গ্রামের ১৫ বিঘা জমির মৎস্যঘেরটির মধ্যে ওই গ্রামের হালিম হাওলাদার ও তৈয়ব আলী হাওলাদারের নিজস্ব জমি রয়েছে। তৈয়ব আলী হালিম হাওলাদারের জমির হাড়ির টাকা না দিয়ে সেখানে কয়েক বছর ধরে ঘের করছিলেন। এ নিয়ে হালিম থানা পুলিশ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও এমপির মনোনীত শালিশগণ ঘটনাটি নিষ্পত্তির জন্য ৮-১০ বার শালিশ বৈঠক করে মিমাংশায় ব্যার্থ হন। সোমবার তৈয়ব আলীর পক্ষ হয়ে শতাধীক লোক ওই ঘেরে ভেকু মেশিন দিয়ে ভেরিবাধতে যায়। এ সময় হালিমের লোকজন বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা করে তৈয়ব আলীর লোকজন। এক পর্যায়ে ঘের সংলগ্ন নুর মোহাম্মদ শেখের বাড়ির মধ্যে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের ওপরও হামলা করে তৈয়ব আলীর লোকজন।
এ ঘটনার জন্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান ও জিউধরা ফাঁড়ি পুলিশের আইসি এসআই সুফলকে দায়ী করছেন অনেকে। গুরুতর আহত হালিম হাওলাদারও তার স্বজনেরা বলেন, মিজানের নেতৃত্বে মারপিট করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কোন ভূমিক নেয়নি। অপরদিকে আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার জন্য থানা পুলিশের এসআই জহির দায়ী। তার উস্কানীতে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
বিবাদমান এই ঘেরটি নিয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. তাজিনুর রহমান পলাশের অফিসে প্রায় ১৫ দিন পূর্বে সর্বশেষ শালিশ বৈঠক হয়। সেখানে সাদা কাগজে উভয় পক্ষের স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেওয়া হয় বলেও আওয়ামী লীগ নেতা মিজান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তেমন কিছু ঘটেনি। আহতদেরকে হাসপাতালে পাঠাতে পুলিশ সহযোগীতা করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ।