কলি আক্তার, মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট) প্রতিনিধি
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পানগুছি নদীতে সিমেন্টের ফ্লাইএ্যাশ বহনকারি একটি কার্গো
জাহাজের আঘাতে ফারুক খলিফা (৬০) নামে এক নৌকা মাঝি নিহত হয়েছেন। গতকাল
সোমবার বেলা ৯ টার দিকে ঘষিয়াখালী লঞ্চঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ফারুক খলিফা
ঘষিয়াখালী গ্রামের মৃত আলকাজ খলিফার ছেলে। তিনি স্থানীয় আশ্রয়ন প্রকল্পে মুজিববর্ষের
ঘরের বাসিন্দা ছিলেন। তার স্ত্রী ও ৪ সন্তান রয়েছে।
জানা গেছে, ঘটনার সময় ফারুক খলিফা তার নৌকাটি (টাপুরে নৌকা) ঘাটে বেঁধে তার
মধ্যে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় মোংলা থেকে চট্টগ্রাম গামী কার্গো ‘কাজী সোনিয়া-
১’ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নৌকাটির ওপর আঘাত করে। আঘাতে মাঝি ফারুক খলিফার মাথার খুলি ও
ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। খবর পেয়ে নিকটস্থ ঘষিয়াখালী
নৌ ফাঁড়ি ও মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশের পৃথক দল ঘটনাস্থলে পৌছে কার্গো ও এর নাবিকদের
নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
জাহাজের পাইলট বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘জাহাজটি নিয়ন্ত্রণ হারানোর সাথে সাথেই আমরা
সকলকে সতর্ক করি এবং ঘাট এলাকা থেকে সরে যাবার জন্য জাহাজের মাইকে প্রচার করি।
কিন্তু ওই মাঝি হয়তো এ ঘোষণা শুনতে পায়নি’।
জাহানারা বেগম বেগম বলেন, কার্গোটি আমার স্বামীকে তো খেয়েছে। আমাদের আয়ের
একমাত্র সম্বল নৌকাও ধ্বংস করেছে। এখন একমাত্র ছেলেকে নিয়ে আমি কিভাবে সংসার চালাব।
আমি এই হত্যাকারীদের সঠিক বিচার চাই।
স্থানীয় বহরবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রিপন হোসেন তালুকদার বলেন, নিহত
ফারুক হোসেন খলিফা খুবই দরিদ্র একজন মানুষ। খেয়ে না খেয়ে তার সংসার চলত।হতদরিদ্র এই
পরিবারটির স্বচ্ছলতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান এই জন
প্রতিনিধি।
ঘষিয়াখালী নৌ পুলিশ ফারির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল
থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো
হয়েছে। আমরা কার্গোটিকে আটক করেছি। কার্গোর মাস্টারসহ ১১জনকে আটক করা
হয়েছে। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।