সমাজের কন্ঠ ডেস্ক – সৌদী আরবকে হটিয়ে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নেতা হয়ে উঠছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। সৌদি আরবকে প্রতিস্থাপন করে ইসলামী বিশ্বের নেতৃত্বের জন্য ‘প্রচণ্ড লড়াই করছে তুরস্ক। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান ইসলামী বিশ্বের শীর্ষস্থান থেকে সৌদি আরবকে সরাতে চান এবং এতে চীন ও পাকিস্তানের সমর্থন রয়েছে, খবরটি ইউরেশিয়ান টাইমসের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউরেশিয়ান টাইমসে সাংবাদিক সৈয়দ শফিক এ মন্তব্য করেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, হায়া সোফিয়াকে জাদুঘর থেকে মসজিদে রূপান্তরিত করে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগ দেওয়ার সব আশা চু’রমা’র করে দিয়েছে তুরস্ক এবং এগিয়ে যাচ্ছে ‘প্যান ইসলামিজম’ এর দিকে।
সৌদি আরবকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টার প্রথম সংকেতটি আসে গত বছর, যখন মালয়েশিয়া সৌদি-নিয়ন্ত্রিত অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনকে (ওআইসি) দুর্বল করতে মুসলিম বিশ্বের আরও একটি ফ্রন্ট তৈরির জন্য কুয়ালালামপুর শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে।
শফিক আরও বলেন, এরদোয়ান পাকিস্তান ও কাশ্মীরি জঙ্গিদের খোলাখুলি সমর্থন দেওয়ায় এবং ফাইন্যানসিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) সঙ্গে সং’ঘ’র্ষে ইসলামাবাদকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করায়, তুরস্কের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। তুরস্ক ও পাকিস্তান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নি’রব’চ্ছি’ন্ন ভাবে একে অপরকে সমর্থন দিয়েছে।
সামরিক ক্ষেত্রেও তারা একে অপরকে অনেক সহায়তা করে থাকে। চীনের জিনজিয়াংয়ে কমিউনিস্ট সরকারের হাতে উইগুরদের নি’র্যাতিত-নি’পী’ড়িত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে দেশ দু’টির, যা তাদের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সম’স্যা। তারপরও তুরস্ক ও পাকিস্তানের সম্পর্কে কিছু জ’টিলতা রয়েছে বলে দাবি করেন শফিক।
চীনের সঙ্গে অত্যন্ত নি’বিড় সম্পর্ক থাকায় পূর্বাঞ্চলীয় তুর্কিস্তান ইসলামী আন্দোলনের বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দেয় পাকিস্তান। অপরদিকে তুরস্ক জিনজিয়াংয়ে নেওয়া আপত্তিকর নীতিমালার জন্য শুরু থেকেই চীনের সমালোচনা করে আসছে। তবে পরবর্তী কালে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে উইগুর বিষয়ে নিজের অবস্থান কিছুটা পরিবর্তন করেন এরদোয়ান।
এসময় তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে এবং অন্যদিকে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো হতে থাকে। এমনকি এরদোয়ান আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের পরিকল্পিত তুরস্কের ভিত্তি নষ্ট করে দিচ্ছেন। এ মাসের শুরুতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকা’শিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলা’মিক স্টেট সন্ত্রা’সবাদী গোষ্ঠীর আঞ্চলিক ট্রান’জিট হাব হিসেবে কাজ করছে আঙ্কারা।
গণতা’ন্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও এরদোয়ান ক্রমেই স্বৈ’রতা’ন্ত্রিক আচরণ করছেন এবং আতাতুর্ক পরিকল্পিত ইউরোপীয় ধাঁচের ধর্মনিরপে’ক্ষ তুরস্কের জন্য পর্যাপ্ত ধৈ’র্য নেই তার। তাছাড়া, এরদোয়ানের শা’সনামলে বিরোধী এবং সরকারের সমালোচনাকা’রীদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।