স্টাফ রিপোর্টঃ অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে বিচারের নামে কয়েকজন পুরুষ -,মহিলার কাছ থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সাংবাদিকদের কাছে গোপনে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন তার ওয়ার্ড আমলাই গ্রামের ভোটাররা।তবে তার গঠিত পেটোয়া বাহিনির ভায়ে সকলে পরিচয় গোপন করেছেন।
টিআর-কাবিখা, জিআর বরাদ্দ, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ এবং সংস্কারসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ গ্রামে বরাদ্দ হলেই সে খান থেকে ও হাতিয়ে নেন অর্থ। শুধু তাই নয়, তদন্তে গ্রামে সালিশের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ মিলেছে।
সুত্র জানায়,এক সময় এই সাইফুল ছিলেন মালেশিয়া প্রবাসী। সেখানে থেকে দালালির মাধ্যমে চোরাই পথে দেশ থেকে শ্রমিক নিয়ে যেতেন মালেশিয়াতে। এভাবে তিনি হোন অনেক অর্থের মালিক।
পরে ভোল পাল্টে মালেশিয়া থেকে টাকা পাঠিয়ে গ্রামে একটি বাহিনী তৈরি করেন।তাদের কাজ ছিলো প্রতারণা করে সাইফুলকে গ্রামে গরীব দূঃখীর বন্ধু সাজানো।সাইফুলের স্বপ্ন ছিলো তিনি গোগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দাড়িয়ে নির্বাচন করবেন। কিন্তুু বিশেষ একটি করাণে তিনি তার সিদ্ধান্ত বদলে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করে নির্বাচিত হোন।তবে নির্বাচিত হওয়ার কয়েক মাস পর থেকে এলাকার মানুষ তার সেই আসল রুপ দেখতে পান। তার বাহিনীর লোকদের নিয়ে গ্রামের বাজারে তৈরি করেন একটি ক্লাব।আর সেই ক্লাবে শুরু করেন বিচারের নামে অর্থ বাণিজ্য। এলাকার সহজ সরল মানুষ তার পেটোয়া বাহিনীর ভয়ে কেউ কোন অভিযোগ ছাড়ায় তার বিচার মেনে জমি জায়গা বিক্রি করে তাকে দেন অর্থ।
অভিযোগ রয়েছে,(১)জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে আমলাই গ্রামের জিয়াউর রহমানের বাড়িতে পুটখালী ইউনিয়নের বালুন্ডা গ্রামের একটি মেয়ে তার ছেলের বান্ধবী আসলে ইউপি সদস্য সাইফুলের বাহিনির লোকজন অসামাজিক কার্যকলাপে অভিযোগ এনে জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন এবং টাকা নেওয়ার বিষয়টি ঢাকতে মেয়েটাকে জিয়াউরের ছেলের সাথে তিন লক্ষ টাকা কাবিনে বিয়ে দিয়ে দেন।
(২)একই মাসে আমলাই গ্রামের আবু তালেবের ছেলে জাকির একই গ্রামের মান্নানের স্ত্রীর সাথে অসামাজিক কার্যকলাপে সময় ধরা পড়লে সাইফুল মেম্বারের বাহিনী তাদের ধরে ক্লাবে আনে।পরে ক্লাবের দরজা জানালা বন্ধ করে ছেলের কাছ থেকে ৬০ হাজার ও মান্নানের স্ত্রীক কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে আত্মসাৎ করেন।
(৩)আমলাই গ্রামের আসরাফুলের স্ত্রী কালীয়ানী গ্রামে এক ছেলের সাথে অসামাজিক কার্যকলাপে সময় ধরা পড়লে তাদের কাছ থেকে সাইফুল ও তার বাহিনি মোটা অংকের টাকা নিয়ে আসরাফুলের স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনেন বলে অভিযোগ আছে।
(৪) জানুয়ারীর শেষের দিকে আমলাই গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে আব্দুল মজিদ একই গ্রামের একজন বয়স্ক মহিলা ইনছাব মোড়লের মেয়ের সাথে অসামাজিক কার্যকলাপে সময় লোকজন হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশে দিতে চাইলে মেম্বরের বাহিনী জোরপূর্বক ক্লাবে এনে বিচারের নামে পূর্বের ন্যায় দরজা জানালা বন্ধ করে মজিদকে ২০ হাজার টাকা ও মেয়েকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে।এসময় মজিদ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বেধড়ক মারপিট করে জোরপূর্বক টাকা আদায় করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্রামের সচেতন মহলের দাবী মেম্বর এমন বিচারের নামে টাকা নিয়ে এমন অসামাজিক কার্যকলাপে বন্ধ নামে প্রশ্রায় দিচ্ছে।তবে তারা মেম্বরের পেটোয়া বাহিনীর ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না বা মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছে।এ সব কার্যকলাপ যারা করবে তাদের প্রশাসনের হাতে সোর্পদ করলে এমন সহস কেউ পেতো না। মেম্বার এর এমন বিচারের নামে টাকা আত্মসাৎ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এলাকার সচেতন মহল।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগের বিষয়টি সত্য না দাবি করে বলেন, একটি মহল ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে গোগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে বিচারের নামে অর্থ বানিজ্যের বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান।