নূরে হাবিব বিশেষ প্রতিনিধিঃ যশোর জেলায় মাল্টার বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলেও এ বছর উৎপাদন ঘাটতিতে পড়েছে ফলটি। ফুল ও ফল আসলেও পরিপক্বতার আগেই ঝরে পড়ছে; ফলটি বড়ও হচ্ছে না। এতে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়েছে মাল্টা চাষিদের।
অনেকেই জানান,দামে কম, রসালো ও বেশি সুস্বাদু হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে শার্শার মাল্টার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এ বছর অধিকাংশ মাল্টা পরিপূর্ণ পরিপক্বতার আগেই গাছ থেকে ঝরে পড়ছে।তাদের ধারনা আর একটা মাস গাছে মাল্টা রাখতে পারলে ফলের পূনাঙ্গ রং ও পরিপক্কতা আসতো।
কৃষি বিভাগের কাছ থেকে তারা কোন পরামর্শ পাচ্ছে না বলে অধিকাংশ বাগান মালিকরা অভিযোগ করেন।ফলে লোকসানের আশঙ্কায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষীরা ।
মাল্টা চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআচড়া ইউনিয়নের সামটা গ্রামের কৃষক শাহাজান আলি ।
মাল্টা চাষী শাহাজান আলি বলেন, ২০২১সালের শেষ পর্যায়ে প্রায় ৬৬শতাংশ জমিতে বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ শুরু করেন। মাল্টা চাষে লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশায় বুক বেঁধে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়। ৬৬শতাংশ জমিতে মাল্টা গাছের চারা রোপণ করেছেন ১৭৫টি। প্রতিটি গাছে দোল খাচ্ছে মাল্টা। সেই সঙ্গে দোল খাচ্ছে কৃষক শাহাজানের স্বপ্ন পূরণের আশা।
সুস্বাদু এই ফল চাষে নিজেদের স্বাবলস্বী করছেন চাষিরা।দেশি এই সবুজ মাল্টায় রসে টইটম্বুর,স্বাদে ও ঘ্রানে অতুলনীয়। চাষিদের উৎপাদিত মাল্টা এই উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
মাল্টার গাছ গুলো ভারে ন্যুয়ে পড়ার উপক্রম হয়ে পরলে বাশেঁর মাচা দেওয়া হয়েছে অনেক মাল্টার গাছে যেন পড়ে না যায়। কৃষক শাহাজান পাশাপাশি পরিবারের লোকজনও পরিচর্যা কাজে সহায়তা করে থাকেন বলে জানান, মাল্টা চাষী শাহাজান। মাল্টা বাগান জুড়ে প্রচুর পরিমানে মাল্টা দোল খাচ্ছে গাছে গাছে। মাল্টার দোল খাওয়ার সঙ্গে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন কৃষক শাহাজান।
স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি মাল্টা ৪৫ থেকে ৬০ টাকা পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি হয়েছে। বাগান থেকে এবার দুই লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির আশা করছেন কৃষক শাহাজান। গাছে অধিক হারে মাল্টা ধরায় খুশি বলে জানান তিনি।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন,মাল্টা চাষ লাভবান হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক কৃষক এগিয়ে আসছেন মাল্টা চাষে। প্রশিক্ষণসহ মাল্টা চাষে এখন কৃষকদের সরকারি ভাবে সহায়তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।”
শার্শা উপজেলায় ৫২জন মাল্টা চাষি অন্তত ১২হেক্টর জমিতে এবার মাল্টা চাষ করেছেন বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।