জেলা ক্রাইম রিপোর্টার নীলফামারী\বখাটে এক কলেজ ছাত্রের উৎপাত সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে কারিমা আক্তার কার্নিজ(১৪) নামের এক স্কুল ছাত্রী।সোমবার(১৮ নভেম্বর)দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের কলকুটিপাড়া গ্রামে। কার্নিজ ওই গ্রামের কৃষক আবুল কালামের মেয়ে। সে এবার কিশোরীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তিন ভাই-বোনের মধ্যে কার্নিজ বড়। এ ঘটনার পর পালিয়ে গেছে বখাটে কলেজ ছাত্র কাওছার আলী(১৮)। কাওছার একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। সে উপজেলার পুটিমারী বিএম কলেজের প্রথম ব্যাংকিং শাখার প্রথম বর্ষের ছাত্র।
কারিমা আক্তার কার্নিজের বাবা আবুল কালাম ও মা শিল্পী বেগম অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের কাওছার আলী তার মেয়েকে বেশ কিছুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এনিয়ে গত ১০ দিন আগে গ্রামে বিচার সালিশে কাওছার আর উৎপাত করবেনা বলে ক্ষমা চায়। কিন্তু শনিবার (১৬ নবেম্বর) কারিমা আক্তার কার্নিজ জেএসসির শেষ পরীক্ষা দিয়ে ফিরে আসার সময় রাস্তায় পুনরায় উৎপাত করে কাওছার। মেয়ে বাড়ি ফিরে বিষয়টি জানালে আমরা কাওছারের পরিবারের কাছে অভিযোগ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কাওছার ছুটে এসে কার্নিজের বাবাকে মারপিট করে হুমকী দেন। এ নিয়ে গ্রামে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের আশংকা সৃস্টি হলে পুলিশ এসে তা থামিয়ে দিয়ে চলে যায়। কিন্তু কাওছারের হুমকী ধামকিতে কারিমা আক্তার কার্নিজ বাড়ির বাহিরে বের হতে পারছিলোনা। ঘটনার দিন সকালে মেয়েটি বাড়ির বাহিরে দরজায় দাড়ালে কাওছার ছুটে এসে তাকে বউ বউ বলে ডাকতে থাকে। এ অবস্থায় মেয়েটি ছুটে নিজ ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এর কিছুক্ষন পর ঘরে একটা শব্দ হলে পরিবারের লোকজন ছুটে গিয়ে মেয়েকে ডেকেও কোন সারা শব্দ না পেয়ে তারা ঘরের দরজা ভেঙ্গে দেখতে পায় ঘরের তীরের সঙ্গে দড়ি বেধে গলায় ফাস দিয়ে তাদের মেয়ে ঝুলছে। এলাকাবাসীর সহায়তায় তারা মেয়েকে নামিয়ে উপজেলা হাসপাতালে নিলে সেখানকার জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বাবু এলাকার সচেতন ব্যাক্তিরা বলেন, বখাটে কাওছারের উৎপাতে মেধাবী শিক্ষার্থী কার্ণিজের এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।দ্রæত অভিযুক্ত বখাটেকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মফিজুল হক জানান,আমরা উপজেলা হাসপাতাল হতে মেয়েটির মরদেহ দুপুরে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলার মর্গে প্রেরন করেছি। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।