স্টাফ রিপোর্টার –
নওয়াপাড়ায় সরকার গ্রুপের চেয়ারম্যান আলমগীর সরকারের সদ্য নির্মিত ৭ তলা ভবনের নীচতলার পানির রিজার্ভ ট্যাংকি থেকে উদ্ধার হওয়া রং মিস্ত্রী ঠিকাদার হাবিব হত্যার রহস্য উম্মোচন করেছে পুলিশ। রং মিস্ত্রীর ঠিকাদার হাবিবের সহযোগি মামুনই হাবিবের ঘাতক বলে অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। মূলত মামুন আটকের মধ্য দিয়েই এবং তার স্বীকারোক্তিতেই হত্যাকা-ের রহস্য উম্মোচিত হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। মামুনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশের ভাষ্য। মামুন দীর্ঘদিন যাবৎ হাবিব খানের সাথে রং মিস্ত্রীর কাজ করতো। তবে ঠিকমত টাকা পেতোনা। সর্বশেষ হাবিবের কাছে ৫ হাজার ২শ’ টাকা পাওনা ছিলো মামুনের। সেই টাকা নিয়েই হাবিবের সাথে মামুনের বাকবিত-া হয়। কিন্তু হাবিবের কাছে টাকা চাইলে হাবিব মাত্র পাঁচশ’ টাকা দেয়ায় গত ১৩ অক্টোবর হাবিবের সাথে মামুনের বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় হাবিব মামুনকে বটি নিয়ে কোপাতে যায়। তখন মামুন সেখান থেকে সরে যায়।
পরবর্তীতে বাসায় ফিরে ওই রাতে হাবিবের সাথে মামুন আর কোন কথা বলেনি। পরদিন সকালে স্বাভাবিকভাবে রান্না করে মামুন। হাবিব ও মামুন এক সাথে সকালের খাবার খেয়ে মামুন নওয়াপাড়া বৌ বাজার এলাকায় একটি পাঁচতলা ভবনে কাজে যায়। সেখানে যেয়ে সেখানে নিয়োজিত মিস্ত্রী কাজ করায় সে ফিরে আসে। ফিরে এসে নওয়াপাড়া বাজারের একটি দোকান থেকে রিভো-০৫ নামের একপাতা ঘুমের ওষুধ কেনে। এবং চায়ের দোকানীর কাছে রাখা একটি চাকু নেয়। মামুনের ভাষ্য অনুযায়ী পুলিশ আরও জানায়, ওই দিন রাত ১০ টার দিকে মামুন হাবিব ও নিজের জন্য আলু ভর্তা দিয়ে ভাত রান্না করে। এসময় সে নিজের আলু ভর্তা আলাদা রেখে হাবিবের আলু ভর্তার সাথে একপাতা ঘুমের ওষুধ গুড়ো করে মিশিয়ে দেয়।
রাতে খাবার খেয়ে হাবিব ঘুমে অচেতন হয়ে পড়ে। রাত একটার দিকে মামুন হাবিবকে কাছে থাকা চাকু দিয়ে জবাই করে। পরে হাত বেঁধে লাশ সিঁড়ি দিয়ে টেনে হেঁচড়ে নিচতলায় নিয়ে আসে। এবং রিজার্ভ ট্যাংকির ঢাকনা খুলে পায়ে ইট বেঁধে ট্যাংকের মধ্যে ফেলে দিয়ে ঢাকনা আটকে দেয়। লাশ ফেলার পর মামুন দোতলার ওই কক্ষে গিয়ে মেঝের রক্ত মুছে এবং সিড়ির রক্ত মুছে রক্তমাখা জামাকাপড় কার্ণিশে লুকিয়ে রাখে। এবং ছুরিটা বাথরুমের প্যানের মধ্যে ফেলে দেয়। তারপর গোসল করে ভোর চারটার দিকে পেছনের গেট দিয়ে পালিয়ে যায় মামুন। যদিও এসময় তার কাছে কোন ঘড়ি বা মোবাইল ফোন ছিলো না। সেখান থেকে সে চুড়ামনকাঠি খালা বাড়ি যায় পরে নড়াইলের লোহাগড়ায় দাদা বাড়ি একদিন থাকে। পরদিন ঢাকার আশুলিয়ায় ফুফুর বাড়িতে যায়। সেখান থেকে গতকাল ঢাকার আশুলিয়ায় ফুফুর বাড়ি থেকে মামুনকে আটক করে ডিবি ও থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ওসি তাজুল ইসলামের সাথে কথা বলে আটক মামুনকে আদালতে সোপার্দ করে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামুনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।