শেখ জাকারয়িা রহমান- যশোরের অভয়নগর উপজেলা সদর নওয়াপাড়া পৌরসভার ব্যস্ততম ফুটপথ দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন কিছু সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী। এতে পথচারিদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। অপর দিকে সরু পথ দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে না পারলে কোথাও অগ্নি সংযোগ ঘটলে বাজার ভষ্মিভূত হওয়ার আশংকা করছেন ফারয়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। দিনের পর দিন এ অবস্থা চললেও উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ ফুটপাত দখলমুক্ত করার কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। নওয়াপাড়া পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, নওয়াপাড়া বাজারে চলাচলের জন্য অনেকগুলো গলি পথ আছে। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যস্ততম গলি। যশোর – খুলনা মহাসড়কে যানজট থেকে রেহাই পেতে বিকল্প পথ হিসাবে জনগন ওই সব গলি পথে যাতায়ত করেন। এক একটি গলি ১০ থেকে ১৬ ফিট পর্যন্ত চওড়া। কিন্তু দখলদারেরা গলি দখল করে দোকানের পসরা সাজিয়ে রেখে মাত্র ৪ থেকে ৫ ফুট গলিতে পরিনত করেছে। এতে করে বাজারে মালামাল নিয়ে ভ্যান রিক্সা ঢুকতে পারে না। কোথাও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিস গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সাভির্সের নওয়াপাড়া স্টেশন কর্মকর্তা খান এহসান-উল আলম জানান, আমরা অনেক বার গলি দখল মুক্ত করার জন্য বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এই মুহুর্তে যদি বাজারে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে তাহলে বাজার ভষ্মিভূত হবে। তিনি বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিতে বাজার কমিটি ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন। অপরদিকে গলি দখলের ফলে পথচারিদের ও চলাচলে বিঘœ ঘটছে। আসন্ন ঈদের কেনাকাটা করতে আসা লোকের ভিড়ে চলাচল দুরুহ হয়ে পড়েছে। ্এসব গলির মধ্যে রয়েছে নওয়াপড়া কাপড়পটি, চুড়িপটি, মুদিপটিও কাঁচা বাজারে গলি উল্লেখযোগ্যা। সরেজমিনে গত বুধবার কাপড় পর্টি, চুড়ি পর্টি, মুদিপটি, কাচাঁ বাজার, ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাদের দোকানদার সামনের ফুটপাত দখল করে রেখেছে। কেউ বেঞ্চ বসিয়ে আবার কেউ দোকানের মালামাল ফুটপাতের ওপর সাজিয়ে রেখেছে। নুরবাগ মোড় থেকে রেলগেট প্রর্যন্ত ফলের দোকান সহ নানা ধরনের কাচাঁ মালের দোকান বসিয়ে দেদারচ্ছে বেচাকেনা করছে তারা। স্বাধীনতা চত্বরের চার রাস্তা দখল করে মটর সাইকেল,ভ্যান,ইজিবাইক, স্টান্ড করা হয়েছে। নূর বাগরের পাশে হাসপাতাল রোডে প্রতিদিন বসে কাচা বাজার। ওই সব দোকান পাটের জন্য সড়কে স্থায়ী যানজট লেগে থাকে। স্কুলে আসা যাওয়ায় বিঘœ ঘটে ছাত্র-ছাত্রীদের। এলাকাবাসির অভিযোগ পৌর কর্তৃপক্ষ পৌরবাসীর স্বার্থ না দেখে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখেন। তাই দিনের পর দিন এ অবস্থা চললেও পৌর কর্তৃপক্ষ ফুটপাত দখলমুক্ত করতে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না। তারা আরো জানান,কয়েক বছর আগে চুড়ি পর্টির অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হয়েছিলো। তারা সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়ে পাশের নবারুর মার্কেটে দোকান বসিয়েছিলো। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই আবার তারা পূর্বের জায়গায় ফিরে আসে। ফুটপথ দখল করে দোকান ও ব্যবসা করেন এমন কিছু ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত পৌর সভাকে কর দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করি। হাটের ইজারা নিয়েছেন একজন প্রভাবশালী লোক যে করনে প্রশাসন আমাদের কিছুই করতে পারবে না। বাজারে কেনাকাটা করতে আসা পথচারি ধোপাদী গ্রামের আছমা বেগম বলেন, চিপা গলির ভিতর দিয়ে সম্ভ্রম রক্ষা করে চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। গলি দখল মুক্ত হলে আমরা সাচ্ছন্দে চলাচল করতে পারতাম। নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র সুশান্ত কুমার দাস শান্ত বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে মাইকিং করে দোকানিদের ফুটপাত ছেড়ে দেওয়ার র্নিদেশ দিয়েছি। আমরা ফুটপথের দোকান থেকে কোন খাজনা আদায় করি না। ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে এক-দুই মাস পারপর অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করি। এটি আমাদের চলমান প্রক্রিযা। জনগণের অসুবিধা করে আমরা কোনোভাবেই ফুটপথ দখল করে রাখতে দেব না। খুব শিগগিরই আবার আমরা ফুটপথ দখল মুক্ত করার অভিযান শুরু করব।