তরিকুল ইসলাম, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় দুই যুবককে মারপিট করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। শনিবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ৭টা ও দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম পাতাখালি বেড়িবাঁধে ঘটনাটি ঘটে।
হামলার শিকার শাহিন বিল্লাহ পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব পাতাখালি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অনার্স বিভাগের শিক্ষার্থী। অপর হামলার শিকার ইয়াছির আরাফাত পাতাখালি গ্রামের জামাত আলী মোল্লার ছেলে। তারা উভয়ই উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন।
ইয়াছির আরাফাত জানান, শুক্রবার (২৮ মে) সকালে ভাঙনকবলিত বাঁধে গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে প্রতীকী লাশ হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। বিভিন্ন মিডিয়ায় গুরুত্ব সহকারে উপকূলবাসীর দাবির বিষয়টি প্রকাশ পায়।
তিনি আরও বলেন, শনিবার সকালে পশ্চিম পাতাখালি এলাকায় বাঁধ মেরামতের কাজ চলছিল। সেখানে বাঁধ নির্মাণের সহযোগিতার কাজে গেলে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আলমগীর কবির ও পদ্মপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান।
তারা বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি করেছ কেন? এসব করার কী দরকার? তোমাদের নামে মামলা দেওয়া হবে। ইউএনও সাহেব মামলা দিতে বলেছেন।’ এসব বলতে বলতে শাহিন বিল্লাহকে গলা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ও কিলঘুষি মারতে থাকেন চেয়ারম্যান। পরে উপস্থিত লোকজন তার হাত থেকে শাহিনকে রক্ষা করেন।
জানা যায়, শাহিনকে মারধরের ঘটনার কারণ জানতে গিয়ে দুুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইয়াছির আরাফাত নামে এক যুবককে মারপিট করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। পাশে দাঁড়িয়ে উসকানি দিচ্ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আলমগীর কবির।
উসহকারী প্রকৌশলী আলমগীর কবির জানান, আমি তাদের কারো গায়ে হাত দেইনি। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান দুই একটি চড়-থাপ্পড় দিয়েছেন। তারা চেয়ারমানকে না জানিয়ে বাঁধ নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে। ঘটনাটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় চেয়ারম্যানের ওপর চাপ পড়েছে। মূলত সেই বিষয়টা নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে।
ঘটনার বিষয়ে পদ্মপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে কল দিলে রিসিভ করেননি তিনি।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজর গিফারী বলেন, মানববন্ধন করা বা দাবি নিয়ে কর্মসূচি পালন করা মানুষের মৌলিক অধিকার। আমি মামলা দিতে বলব কেন? কেউ একথা বলে থাকলে মিথ্যা বলেছেন। আমি এখনই বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।