নাজিম উদ্দীন জনি,শার্শা(বেনাপোল)প্রতিনিধিঃ রাষ্ট্রের কাছে জনগণের অন্যতম মৌলিক চাহিদার একটি হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। আর স্বাস্থ্য মানবসম্পদ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত। সংবিধানের ১৫(ক) এবং ১৮(১)- অনুচ্ছেদে চিকিৎসাসেবা এবং জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
আর মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে চিকিৎসা অন্যতম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে করোনাভাইরাস রোগ (কোভিড-১৯) এর দ্বিতীয় ধাপ ছড়িয়ে পড়ার কারনে সাধারন স্বাস্থ্যসেবায় বড় ধরনের সংকট সৃস্টি করেছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস রোগের মহামারী বলতে বাংলাদেশে এটির প্রাদুর্ভাব ও দ্রুত বিস্তারে চলমান ঘটনাটিকে নির্দেশ করে, যা বর্তমানে চলমান বিশ্বজুড়ে মহামারীর একটি অংশ।
করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯) নামক একটি রোগ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কারণে এই বৈশ্বিক মহামারীটির সৃষ্টি হয়েছে। গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলণ সমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস ২ (সার্স-কোভ-২) নামক সংক্রামক ধরনের একটি জীবাণুই প্রকৃতপক্ষে মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়ে মানবদেহে এই রোগটি সৃষ্টি করে। এবং এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অনেক চিকিৎসকসহ মানুষ মৃত্যু বরণ করেছেন।
এই প্রাণঘাতী করোনা যুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা বিষয়ে মানুষের আস্থার ঠিকানা শার্শার সুনামধন্য চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান জোহরা মেডিকেল সেন্টারের সত্বাধীকারি চিকিৎসক দম্পতি ডাঃ হাবিবুর রহমান হাবিব ও ডাঃ নাজমুন নাহার রানী।
শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাতমাইলে অবস্থিত এ ক্লিনিকটি।
করোনা ভাইরাসের প্রথম ধাপে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে এই চিকিৎসক দম্পতি আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনা ভাইরাসে। ছিলেন আইসিইউতে।সুস্থ হয়ে নিজের এবং ফ্যামিলির কথা চিন্তা না করে তারা আবার ও নিজেদের নিয়োগ করেছেন মানুষের চিকিৎসা সেবায়।যখন বড় বড় ডাক্তারেরা করোনার ভয়ে বাড়িতে বসে ভিডিওকলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন তখন এই দম্পতি রোগী দেখছেন রোগীদের সামনে বসিয়ে করছেন আল্ট্রাসাউন্ড দেখছেন প্রেশার।তাই এলাকার মানুষের চিকিৎসা সেবা বিষয়ে আস্থার ঠিকানা এখন এই চিকিৎসক দম্পতি।
প্রতিদিন শার্শা,ঝিকরগাছা ও পার্শ্ববর্তী সাতক্ষীরা জেলা থেকে এ ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা নিতে অনেক রোগী আসে।
কথা হয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী রিমা খাতুনের সাথে তিনি এসেছেন পাশ্ববর্তী সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থেকে।কলারোয়াতে অনেক ডাক্তার হাসপাতাল ক্লিনিক থাকতে তিনি কেনো এতো দুরে চিকিৎসা নিতে এসেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার এলাকার অনেকে এখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়েছে। তাছাড়া এখানে সল্প খরচে সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যায় তাই আমি এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছি।
ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী জাহানারা বলেন,এখানে ডাক্তাদের আলাপ ব্যবহার অনেক সুন্দর এবং অনেক কম খরচে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় বলে আমি এবং আমার ফ্যামিলির আস্থার চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান এটি।
এ ব্যাপারে বাগআঁচড়া জোহরা মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন,
জ্বর সর্দি কাশি নিয়ে ইদানীং বিপুল সংখ্যক মানুষ আসছেন। “আমাদের কাছে করোনাভাইরাস চিহ্নিতকরণের কিট না থাকায় সর্দি, জ্বর বা গলা ব্যথার উপসর্গ নিয়ে আসা সন্দেহজনক রোগীদের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও যশোর সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।”
ডাঃ নাজমুন নাহার রানী বলেন,করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রথম ধাপে সরকারি হাসপাতলে ডিউটি ও ক্লিনিকে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে আমরা দুজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ছিলাম। তার পর ও মানবতার কথা ভেবে নিজেদের ফ্যামিলির কথা চিন্তা না করে আল্লহর উপর ভরসা রেখে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তবে করোনা সন্দেহজনক রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও যশোর সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।”