সমাজের কন্ঠ ডেস্ক – ঈদের পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে নামছে সরকার। আসন্ন ঈদের পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করবে সরকার। দুর্নীতি দমন কমিশন ছাড়াও দুর্নীতি এবং অবৈধ সম্পদ খুঁজতে গড়ে তোলা হচ্ছে ‘এন্টিকরাপশন ইনটেলিজেন্স ইউনিট। সরকারী কাজে ও সরকারী বিভিন্ন জিনিষ কেনাকাটায় দুর্নীতি বন্ধে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে রুপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের সীমাহীন দুর্নীতি নিয়ে মিডিয়ায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হৈচৈ চলছে। যার ফলে টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। যার ফলশ্রুতিতে সরকারী বিভিন্ন কেনাকাটায় দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকরী সেল গঠন করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন। উল্লেখ্য, এবার আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। সূত্রমতে ‘এন্টিকরাপশন ইনটেলিজেন্স ইউনিট’ এর প্রধান কাজ হবে সরকারী কেনাকাটা, টেন্ডার ইত্যাদি মনিটরিং করা। প্রকল্পিত দর নির্ধারণ থেকে শুরু করে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অসচ্ছতা এবং অনিয়মগুলো খুঁজে বের করা। এসব প্রক্রিয়ায় সরকারী কোন কোন কর্মকর্তা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন, তাদের চিহ্নিত করা। সূত্রমতে, এই ইউনিট টেন্ডার প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম পেলে সাথে সাথে তা সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে প্রেরণ করবে। জানা গেছে, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এবং অ্যান্টি মানি লন্ডারিং টাস্ক ফোর্সের আদলে এই ইউনিটটি গঠিত হবে। এখানে সরকারের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নেতৃত্ব দেবেন। তার সঙ্গে ক্রয় সম্পর্কিত বিশেষত, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা, এনবিআর এর প্রতিনিধি , বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি থাকবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় অথবা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই সেলের প্রধান থাকবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকার ই-টেন্ডারিং চালু করছে। কিন্তু ই-টেন্ডারিং হলেই দুর্নীতি বন্ধ হবে বলে যেমনটি মনে করা হয়েছিল তা হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, একটি টেন্ডার প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির শুরু হয় এর প্রাক্কলন প্রক্রিয়া। প্রথমেই কর্তৃপক্ষ পছন্দের দরদাতাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে একটি প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করে , যা বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। এটাতেই প্রথম দুর্নীতির সূচনা হয়। দ্বিতীয়ত টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরিতে পছন্দের দরদাতার জন্য সুবিধাজনক শর্তাবলী ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তৃতীয়ত, এমন নমুনা সংযুক্ত করা হয় যেটা একজন নির্দিষ্ট দরদাতার অনুকূলে যায়। ফলে আপাত নিরপেক্ষ একটি টেন্ডার প্রক্রিয়া হলেও শুরুতেই একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশে টেন্ডারে অনিয়ম ঢুকে পড়ে। দরদাতারা মনেই করেন, কাজ পেতে হলে বিভিন্ন জায়গায় খরচাপাতি করতে হবে। এজন্য নিজের লাভের সঙ্গে অন্যান্য খরচ যুক্ত করেন। এভাবে বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায় টেন্ডারের কেনা পণ্যের দাম। এই প্রেক্ষিতে সরকার এবার সরকারি ক্রয়ের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে। ঈদের পর থেকেই শুরু হচ্ছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম। |