নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকবাল হোসেনের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করেছে তালার কথিত প্রতারক স্টিকার সাংবাদিক সাইদ সম্রাট। তবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে এখনো কোন প্রকার আইনের আওতায় আনা তাকে। অভিযুক্ত প্রতারক সাঈদ সম্রাট (২০) সে তালা সদরের রহিমাবাদ গ্রামের মহিউদ্দীন গাজীর ছেলে।
‘ক্লিন সাতক্ষীরা গ্রীন সাতক্ষীরা’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। আর এই সুযোগে প্রতারক সাইদ তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকবাল হোসেনের নাম ব্যবহার করে চাঁদা নিয়েছে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে। এ ঘটনায় ওই প্রধান শিক্ষক মৌখিক ভাবে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন ইউএনও মোঃ ইকবাল হোসেন কে। এর আগে এ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে অবহিত করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা যায়।
এ সকল বিষয়ে তালা সদরের ডাঙ্গানলতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম হোসেন বলেন, সাইদ সম্রাট নামের একটি ছেলে আমার স্কুলে আসে কিছুদিন আগে। তার বাড়ী তালা সদরের রহিমাবাদ গ্রামে। স্কুলে যেয়ে সে আমাকে বলেন ইউএনও স্যার তাকে দশটি স্কুলের দায়িত্ব দিয়েছেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও ডেঙ্গু সচেতনতা বিষয়ে ভিজিট করার জন্য। এই কথা বলে সে আমার স্কুলের বেশ কিছু ছবি তোলেন এবং ডেঙ্গু বিষয়ে আমার বক্তব্যের ভিডিও ধারন করেন। তারপরে সে আমার কাছে কিছু টাকার চাইলে আমি তাকে অল্প পরিমানে কিছু টাকা দিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, ইউএনও স্যারের না বলায় আমি তাকে গুরুত্বের সাথে সকল তথ্য দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারি এই ছেলেটি একটি প্রতারক। আর ইউএনও স্যারের নাম ব্যবহার করে এই কাজটি করছে সে। বিষয়টি আমি ইউএনও স্যারকে অবহিত করেছি ইতিমধ্যে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক ব্যক্তি জানান, শুধু ডাঙ্গানলতা স্কুল নয়,সে সুভাষিণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢুলুন্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ আরও অনেক জায়গায় থেকে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা নিয়েছেন।
এ সকল বিষয়ে অভিযুক্ত সাইদ সম্রাট বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই স্কুলে গিয়েছিলাম তবে ইউএনও স্যারের নাম ব্যবহার করিনি।
তিনি কোন পত্রিকায় কাজ করেন জানতে চাইলে বলেন, তিনি অনলাইন পল্লী টিভির রিপোর্টার।
এদিকে, হাসান আলী বাচ্ছু নামের এক রিপোর্টার জানান, পল্লীটিভিতে প্রথম থেকে-ই তিনি কাজ করে আসছেন। সাইদ সম্রাট নামের কোন রিপোর্টার নেই পল্লী টিভি অনলাইনে। সাইদ এই পল্লী টিভির নাম ব্যবহার বিভ্রান্তিকর অবস্থায় সৃষ্টি করছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে সময় টিভির সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের নিরিহ মানুষকে ভয় ভিতি দেখিয়ে সে দীর্ঘদিন চাঁদাবাজি করছিলো। বিষয়টি সময় টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ও সাতক্ষীরার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপ্পীর নজরের আসলে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায় সাতক্ষীরার প্রেসক্লাবে।একটি পর্যায়ে প্রতারক সাইদ নিজের মুখে স্বীকারোক্তি দেয় সে সময় টিভির স্টিকার ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন। এরপর তাকে পুলিশের দেওয়ার কথা বললে হাত পা ধরে সে যাত্রায় কোন রকমে পার পেয়ে গেলেও থেমে নেই তার এই চাঁদাবাজির কৌশল। দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সে। তাছাড়া তার একাধিক ভিজিটিং কার্ড রয়েছে। কোথায় তিনি টিভি আর্টিস্ট আবার কোথাও তিনি জাদুকর লেখা রয়েছে। তাছাড়া তার মটরসাইকেলে ইমার্জেন্সী হর্ণ ব্যবহার করে দাপিয়ে বেড়ায় সমস্ত তালা বাজার।
এ সকল বিষয়ে বৃহস্পতিবার তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, বিষয়টি ওসি কে বলা হয়েছে। ওসি সাইদকে খুজছে। এ বিষয়ে আইনানুগ যে ব্যবস্থা ওসিকে সেটা নিতে বলেছি। ওসি তার বিরুদ্ধে আইনগত যে ব্যবস্থা সেটি নিবে। তাছাড়া তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত সাইদ খুব ভয়ে রয়েছে।