উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। যশোর জেলায় মোট ৩৯ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত।

0
24

শেখ জাকারিয়া (স্টাফ রিপোর্টার) – পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে যশোরের সাত উপজেলায় অংশগ্রহণকারী ৮৪ প্রার্থীর মধ্যে সাত চেয়ারম্যান, ২৩ ভাইস চেয়ারম্যান ও আট মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ মোট ৩৯ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এছাড়া মোট ভোট প্রদান করেছেন ৪০ দশমিক ৯২ ভাগ ভোটার। সাত উপজেলায় মোট ভোটার ১৮ লাখ ১৫ হাজার ২১১ জন। এরমধ্যে ভোট প্রদান করেন মাত্র ছয় লাখ ৩৭ হাজার ৯০০ তিন জন ভোটার। সদর উপজেলায় সবচেয়ে কম ১৩ দশমিক ২৪ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে। সবচেয়ে বেশি শতকরা ৫২ দশমিক ৯৩ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে চৌগাছা উপজেলায়। এছাড়া বাঘারপাড়ায় ৫২ দশমিক ৫১, কেশবপুরে ৪৪ দশমিক ৫১, ঝিকরগাছায় ৪৪ দশমিক ৩৬, অভয়নগরে ৪১ দশমিক ৩৮ এবং মণিরামপুরে ৩৭ দশমিক ১ ভাগ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রকাশিত বেসরকারি ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আইন-১৯৭২ অনুযায়ী কোনও প্রার্থী নির্বাচনে প্রদত্ত (কাস্টিং ভোট) ভোটের আট ভাগের এক ভাগের কম; অর্থাৎ ১২ দশমিক ৫ শতাংশের কম ভোট পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। উপজেলা নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী একজন প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশনে ১০ হাজার টাকা জামানত দিতে হয়। যশোর সদর, চৌগাছা, ঝিকরগাছা ও বাঘারপাড়া উজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হুসাইন শওকত এবং কেশবপুর, মণিরামপুর, শার্শা ও অভয়নগর উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা রিটার্নিং অফিসার হুমায়ুন কবীর সাক্ষরিত প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফল ‘বার্তা প্রেরণ শিট’ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যশোর সদর আসনে কোনও প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়নি। এ উপজেলায় ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৩০ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন মাত্র ৭১ হাজার ৮১ জন। শতকরা হিসেবে ১৩ দশমিক ২৪ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ৮ হাজার ৮৮৫ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে আনোয়ার হোসেন বিপুল ৫২ হাজার ১১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্ধি সুলতান মাহমুদ বিপুল পেয়েছেন ১৭ হাজার ২২০ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নুর জাহান ইসলাম নীরা ৫২ হাজার ৯৯৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্ধী সেতারা খাতুন পেয়েছেন ১৫ হাজার ৯৯৮ ভোট। ঝিকরগাছা উপজেলায় ২ লাখ ৩০ হাজার ২৩৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন মাত্র এক লাখ দুই হাজার ১১৬ জন। শতকরা হিসেবে ৪৪ দশমিক ৩৬ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ১২ হাজার ৭৬৫ ভোট। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২ জন ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী হাবিবুর রহমান (প্রাপ্ত ভোট ১৭০) ও এনপিপির প্রার্থী সাথী বেগম (প্রাপ্ত ভোট) ১১৩), ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইদ্রিস আলী বিশ্বাস (প্রাপ্ত ভোট ৫৩৩৬) এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজনের মধ্যে নাহিদ আক্তার (প্রাপ্ত ভোট ১০৭৫২), তাসবীন সুলতানা (প্রাপ্ত ভোট ৬৪০২) এবং সাহানারা খাতুনের (প্রাপ্ত ভোট ৩৯৬৬) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে মনিরুল ইসলাম আনারস প্রতীকে ৭৪ হাজার ৮৮১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৭৯০ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সেলিম রেজা তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৯ হাজার ২৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি মাহমুদুল ইকরাম টিয়াপাখি প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ১৪৮ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লুবনা তাক্ষী পদ্মফুল প্রতীকে ৪৯ হাজার ১৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতদ্বন্ধি আমেনা খাতুন হাঁস প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৯৯৮ ভোট। এ পদে শিরীন জেসমিন মোছা. মঞ্জুন্নাহার সোনালী বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ১২ হাজার ৩৩৬ ভোট। কেশবপুর উপজেলায় ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৬৯ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন মাত্র ৮৬ হাজার ১৫৫ জন। শতকরা হিসেবে ৪৪ দশমিক ৫১ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ১০ হাজার ৭৬৯ ভোট। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে একজন জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান (প্রাপ্ত ভোট ৫১৭), ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এসএম মাহাবুবুর রহমান (প্রাপ্ত ভোট ২৬১৮), কবির হোসেন (প্রাপ্ত ভোট ৮২২৭), সাইদুর রহমান গাজী (প্রাপ্ত ভোট ৭০৫৮) এবং হাবিবুর রহমানের (প্রাপ্ত ভোট ৪৮৭৭) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে কাজী রফিকুল ইসলাম আনারস প্রতীকে ৪৭ হাজার ৯৭০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি নৌকা প্রতীকের এ এইচ এম আমির হোসেন পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৮১৯ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে পলাশ কুমার মল্লিক তালা প্রতীকে ৪০ হাজার ৯২৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি আব্দুল রতিফ রানা উড়োজাহাজ প্রতীকে পেয়েছেন ১৮ হাজার ১১৮ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাসিমা আক্তার সাদেক হাঁস প্রতীকে ৪০ হাজার ৫৪১ পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি রাবেয়া খাতুন ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৮৭৯ ভোট। অভয়নগর উপজেলায় ১ লাখ ৯৪ হাজার ৪৩৯ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন মাত্র ৮০ হাজার ৪৫২ জন। শতকরা হিসেবে ৪১ দশমিক ৩৮ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ১০ হাজার ৫৭ ভোট। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন আতিয়ার রহমান বাবু (প্রাপ্ত ভোট ৬৪২৮), আব্দুল মান্নান (প্রাপ্ত ভোট ৪৩৭২), বিপুল শেখ (প্রাপ্ত ভোট ৯২৩৩) ও হুমায়ুন কবির মধু (প্রাপ্ত ভোট ৭০৬) এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফরিদা বেগমের (প্রাপ্ত ভোট ৭৯৫০) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর। তিনি পেয়েছেন ৪১ হাজার ৫৫৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী রবিন অধিকারী ব্যাচা আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৯৫৭ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন আখতারুজ্জামান তারু। তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৭৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি আ. রউফ মোল্যা পেয়েছেন ২২ হাজার ৯৪২ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ডা. মিনারা পারভীন ৩৬ হাজার ৭০৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি ডা. সাফিয়া খানম পেয়েছেন ৩১ হাজার ৬২০ ভোট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here