কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে প্রকৃতি। হিমেল পরশে ধীরে ধীরে জেকে বসছে শীত

0
0

ডা. শাহরিয়ার আহমেদ: সকালের শুরুতে প্রকৃতিতে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে সারাদেশ। তারপর ঝলমলে মিষ্টি রোদ। তবে ভরদুপুরে সে রোদের তেজ নেই। আকাশে হালকা কুয়াশা। বাতাসে হিমের গুঞ্জন। সে গুঞ্জনে শীতের আগমনী গান। হেমন্তের সকালে আজ এভাবেই হামাগুড়ি দিয়েছে শীত।

সারাদেশেই ভোর রাতে বেশ শিশির জমছে কচি ঘাসের ওপর। সারাদেশের তাপমাত্রা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে কয়েকদিনেই তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে এসেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ঢাকায় ৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এদিন সন্ধ্যায় তা নেমে ৩০.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে দাঁড়ায়। এছাড়া ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে ১৯.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে চলে এসেছে।

বাতাসে শীতের আবহ শুরু হলেও এখনি জমিয়ে শীত আসছে না। এরজন্য ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে আগামী কয়েকদিনে দেশে তাপমাত্রা আরও কমবে। বিশেষ করে রাতের তাপমাত্রা বেশ নেমে আসতে পারে। এ কারণে শেষ রাতে শীতের অনুভূতি বেশি হতে পারে বলেও তারা জানায়।

প্রকৃতিতে এখন চলছে মধ্য কার্তিক। এর পরই আসবে অগ্রহায়ণ মাস। এই মাসে সারাদেশে ধানকাটা শুরু হয়। দীর্ঘ বন্যা পেরিয়ে কৃষকের মুখে এখন ফসলের হাসি। তারা অপেক্ষা করছে ধানকাটার। আর কয়দিন পরই ধানকাটা শুরু হবে। ধান কাটতে কাটতে গ্রাম বাংলায় শুরু হবে শীতের গান।

শিশির ভেজা সকাল আর খেজুরের মিষ্টি রসের মিতালি শুরু হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রাজধানীতে গরম কাপড়ের ব্যবহার শুরু না হলে গ্রাম বাংলায় রাতে গরম কাপড়ের ব্যবহার শুরু হয়েছে। দিন যত যাবে শীতের মাত্রা আরও বাড়বে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে হেমন্তকাল হচ্ছে শরৎ ও শীতকালের মধ্যবর্তী একটি পরিবর্তনশীল পর্যায়। দিনের শেষে তাপমাত্রার ব্যাপক পতনের ফলে নবেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই বিকেলে হিম পড়তে শুরু করে। আর ঘাসের ওপর জমে শিশির। কুয়াশাও দেখা যায়। সাধারণভাবে সর্দি, কাশি, জ্বর প্রভৃতি রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয় এই ঋতুতে বেশি। মাঠে মাঠে থাকে সোনালি ধান। চাষীরা ধান কেটে ঘরে তোলে এবং ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব শুরু হয়। এখন কৃষকের জন্য প্রকৃতিতে অপেক্ষা করছে নবান্নের। নবান্ন শেষ হলেই জেঁকে নামবে শীত। আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, এবারও মধ্য ডিসেম্বর থেকে জেঁকে শীত নামতে পারে।

দেশে যতগুলো ঋতু আছে এর মধ্যে শীতকাল সবচেয়ে সুন্দর ও আরামদায়ক ঋতু। শীতঋতুর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নিম্ন তাপমাত্রা, পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিমদিক থেকে আগত শৈত্যপ্রবাহ, মুক্ত আকাশ আর বৃষ্টিহীনতা কিংবা যৎসামান্য বৃষ্টিপাত। দেশের একেবারে উত্তর-পশ্চিমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকে ডিসেম্বর মাসের শেষদিকে এবং জানুয়ারি মাসের প্রথমভাগে, তাপমাত্রা ৩ থেকে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যায়। এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চল বাদে দেশের আবহাওয়া শুষ্ক রয়েছে। রাতে কোন কোন অঞ্চলে তাপপাত্রা ২০ ডিগ্রীর নিচেও নামছে। আগামী তিনদিনে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here