ডেস্ক নিউজঃ তরুণদের মানসিক অসুস্থতাজনিত কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রতি বছরে প্রায় ৩৯০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থের ক্ষতি হয়। সেই তুলনায় তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে বৈশ্বিক ব্যয়ের পরিমাণ যেন ‘হিমশৈলের চূড়া মাত্র’।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) ইউনিসেফ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়। তারা সতর্ক করে বলেছে, শিশু-তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর করোনার প্রভাব অনেক বছর ধরে থাকতে পারে।
‘দি স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ড চিলড্রেন ২০২১ অন মাই মাইন্ড: প্রমোটিং, প্রটেক্টিং অ্যান্ড কেয়ারিং ফর চিলড্রেনস মেন্টাল হেলথ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে একবিংশ শতাব্দীতে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ইউনিসেফ তাদের বিশ্লেষণ তুলে ধরেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, করোনা প্রাদুর্ভাবের আগেও শিশু-তরুণরা মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তখনও এ ব্যাপারে বৈশ্বিকভাবে তেমন উদ্যোগ কিংবা বিনিয়োগ করা হয়নি।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিকভাবে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী প্রতি সাতজন কিশোর-কিশোরীর মধ্যে একজনের বেশি মানসিক সমস্যা নিয়ে জীবনযাপন করছে। প্রতি বছর প্রায় ৪৬ হাজার কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যা করে, যাদের মৃত্যুর প্রতি পাঁচটি কারণের একটি মানসিক সমস্যা। এছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা ও বরাদ্দ দেওয়া তহবিলের মধ্যেও রয়েছে বিস্তর ফারাক। বৈশ্বিকভাবে সরকার স্বাস্থ্যখাতে যে বাজেট বরাদ্দ দেয় তার মাত্র ২ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যের পেছনে ব্যয় করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মহামারি বিষয়ে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, এটি আমাদের সবার জন্য বিশেষ করে শিশুদের জন্য মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লকডাউন ও মহামারি সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে শিশুরা শৈশবের গুরুত্বপূর্ণ সময় পরিবার, বন্ধুবান্ধব, ক্লাসরুম, খেলাধুলা থেকে দূরে থাকার কারণে জীবনের একটি অবর্ণনীয় সময় পার করছে। এর প্রভাব বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এমনকি মহামারির আগেও অনেক শিশু শনাক্ত না হওয়া মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছিল। এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মোকাবিলায় যে কোনো দেশের সরকার খুব কমই বিনিয়োগ করেছে। মানসিক স্বাস্থ্য ও এর ভবিষ্যৎ পরিণামের ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।