আল আমিন জনিঃ রাজধানী ঢাকার অদুরে আশুলিয়ায় নিজের কলেজের ছাত্রের মারধরের শিকার হয়ে গুরুতর আহত শিক্ষক আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবশেষে আজ ভোরে মারা গেছেন।
গত দুইদিন মুমুর্ষ অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর আজ সোমবার (২৭শে জুন) ভোরে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিহত কলেজ শিক্ষকের ভাই অসীম কুমার সরকার।
নিহত শিক্ষকের নাম উৎপল কুমার সরকার। তিনি আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়।
এদিকে ঘটনার পর দুইদিন পার হলেও অভিযুক্ত ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। সে ওই কলেজে দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত। সে তার পরিবারের সাথে জামগড়া এলাকাতেই বসবাস করে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে ওই শিক্ষার্থী।
এর আগে শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ২টার দিকে হাজী ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজের মাঠপ্রাঙ্গনেই উৎপল কুমার সরকারের উপর অতর্কিত হামলা চালায় ওই কলেজের ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু।
হামলার পর ওই শিক্ষককে স্থানীয় নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সোমবার ভোরে আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আঘাতে উৎপলের শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হয়। তার পেটে বড় ধরণের অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।
পুলিশ জানায়, স্কুলে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। দুপুরে মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা কলেজ শিক্ষক উৎপলকে হঠাৎ করে এসে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে আশরাফুল। স্ট্যাম্পের আঘাতে উৎপলের মাথায় গুরুতর জখম হয়।
জানা গেছে, উৎপল কলেজের শৃঙ্খলা ও পরিবেশ কমিটির আহবায়ক ছিলেন। তিনি ছাত্রদের বিভিন্ন সময় চুল কাটতে বলা সহ বিভিন্ন আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করতেন। বিভিন্ন অপরাধের বিচারও করতেন তিনি। হয়ত কোনো কারণে সেই শিক্ষকের উপর ছাত্রটির কোনো ক্ষোভ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার এসআই মো. এমদাদুল হক বলেন, নিহতের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেছি। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দ্রুতই অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা চলছে।