অভয়নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হাফেজের লাশ দাফনের ছাড়পত্র পেতেই ১৮ ঘন্টা

0
0
মনিরুজ্জামান মিল্টন,অভয়নগর  প্রতিনিধি:
যশোরের অভয়নগর ও নড়াইল থানার মাঝামাঝি অবস্থান হওয়ায় হাফেজ হযরত আলী মীনার লাশ দাফনের ছাড়পত্র নিয়ে জটিলতায় দীর্ঘ ১৮ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় পরিবারকে।
অভয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী নড়াইল সদর উপজেলার চাকই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বুধবার সন্ধ্যায় ভটভটিতে থাকা গরুর শিং এর ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয় অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। মৃত ওই মোটর সাইকেল আরোহীর নাম হযরত আলী মিনা (১৮) তিনি নড়াইল সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের ফারুক হোসেন মিনার ছেলে। দুই থানার টানপোড়নে তার লাশ হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে ছিল দীর্ঘক্ষণ। তীব্র গরমে  শোকাহত ওই পরিপার লাশের ছাড় করনের জন্য অভয়নগর থানা, নড়াইল থানা ও নড়াইল জেলা প্রশাসকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ১৮ ঘন্টা পর লাশ দাফনের ছাড়পত্র পায়।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায় সূত্রে জানা গেছে, হযরত আলী মিনা গত বুধবার সন্ধ্যায় নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর-নওয়াপাড়া সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে নওয়াপাড়ায় ফিরছিলেন। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে তিনি চাকই গ্রামের চাকই পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে গরুবোঝাই একটি ইঞ্জিন চালিত ভটভটিতে থাকা গরুর শিং এর সাথে ধাক্কায় মারাত্মক আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। রাত পৌনে ৯ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত  ঘোষণা করেন। আইনের জটিলতার জন্য এই অপেক্ষা মেনে নিয়ে হাসপাতালে অবস্থান করা পরিবারের মানসিক অবস্থা দেকজে অনেকেই মর্মাহত।
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রকিবুল ইসলাম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই হযরত আলী মিনার মৃত্যু হয়।
মৃত হযরত আলীর বড়ভাই জিনারুল মিনা জানান, তার ভাই মারা যাওয়ার পর সে একবার অভয়নগর থানায় একবার নড়াইল থানায় ধন্না দেয়। দুই থানার টানাপোড়নে পড়ে তার ভাইয়ের লাশ ছাড় করতে পারেনি। তীব্র গরমে ও রোজা রমজানের কারনে তারা আট থেকে দশজন লোক অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থান করে হয়রানির শিকার হয়েছে। পরে নড়াইল জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ছাড় পত্র নিয়ে অভয়নগর থানায় দেখালে বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় পুলিশ লাশ ছেড়ে দেয়।
অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্য একেএম শামীম হাসান বলেন, ‘মৃতের আত্মীয়রা লাশ ছাড় করনের জন্য নড়াইল থানায় কোন মামলা করতে চায়নি। আমরা নড়াইল থানায় বার্তা পাঠিয়েছি। নড়াইল থানায় তার নামে মামলা না থাকায় এবং ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতিপত্র পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় লাশ ছেড়ে দেওয়া হয়।’
নড়াইল থানার অফিসার ইনচার্য মো: ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমি অভয়নগর থানা থেকে বুধবার রাত দুইটার সময় এ সংক্রান্ত বার্তা পেয়েছিলাম কিন্তু প্রতিউত্তর দেওয়ার আগেই তা আবার তুলে নেওয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকাল ৫টা ২৬ মিনিটে আবার আমাকে বার্তা পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয় মৃতর নামে কোন মামলা আছে কি না। সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে আমি তার নামে কোন মামলা নেই এধরনের বার্তা পাঠাই। কিন্তু এত পরে লাশ ছাড় করা কেনা হলো তা বলতে পারবো না।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here