মেহের আফরোজ, ঢাকা থেকেঃ মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ সাঈদা শওকত জেনিকে হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়েছে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) বিএসএমএমইউ শাখা। একইসঙ্গে ডা. জেনিকে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া পাপিয়ার সঙ্গে তুলনা করা পুলিশ সদস্যের শাস্তি দাবি করেছে সংগঠনটি।
আজ সোমবার (১৯ এপ্রিল) স্বাচিপ বিএসএমএমইউ শাখার আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী ও সদস্য-সচিব ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে এসব কথা বলা হয়।
এতে আরও বলা হয়, ‘গতকাল (১৮ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য এবং স্বাচিপ, বিএসএমএমইউ শাখার সদস্য ডা. সাঈদা শওকত জেনি কর্মক্ষেত্র থেকে ফেরার পথে এলিফ্যান্ট রোডে একদল পুলিশ সদস্য কর্তৃক সম্পূর্ণ অযাচিতভাবে হেনস্তার শিকার হওয়ার মতো নাক্কারজনক ঘটনার অবতারণা হয়। যার খণ্ডিত ভিডিও উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডাক্তার সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করার হীন প্রচেষ্টা থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা হয়েছে বলে স্বাচিপ বিএসএমএমইউ শাখা মনে করে। আমরা পুলিশ ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের এ রকম গর্হিত কাজের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই।’
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে কোভিড অতিমারির এ সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ডাক্তাররা যখন সম্মুখসারিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোভিড মোকাবিলায় লড়ে যাচ্ছে, তখন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার পথে পুলিশ ডা. জেনির গাড়ি থামিয়ে তাঁর কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চায়। এসময়ে নিজের পরিচয় এ গাড়িতে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের লোগো সম্বলিত স্টিকার, পরিচালক কর্তৃক ইস্যুকরা পাস ও বিএসএমএমইউর লোগোসই ডাক্তারের নামাঙ্কিত এপ্রোন দেখলেও এসব কিছুকে ভুয়া বলে পুলিশ ডা. জেনিকে ইচ্ছা করেই চরম হেনস্থা করে। এসময়ে ডাক্তারদের মুভমেন্ট পাস লাগবে না বলে ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হলেও পুলিশ ডা. জেনির কাছে অন্যায়ভাবে মুভমেন্ট পাস চায়।’
‘আমরা আরও বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলাম, তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে পুলিশ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া পাপিয়া সঙ্গেও ডা. জেনির তুলনা করেছে, যা একজন নারী চিকিৎসকের জন্য চরম অবমাননাকর। আমার মনে করি, এর মাধ্যমে পুলিশ শুধুমাত্র ডা. জেনিকে নয়, বরং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও চিকিৎসক সমাজকে এবং সর্বোপরি, একজন সম্মানিত নারীকেও হেয় করেছে’, যোগ করে স্বাচিপ।
এতে বলা হয়, ‘আমরা চিন্তাও করতে পারি না, একজন নারী চিকিৎসককে এতগুলো পুরুষ পুলিশ মিলে এমন ঔদ্ধত্যের সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের নামে হেনস্থা করতে পারে! কোভিড অতিমারির এ দুঃসময়ে চিকিৎসক হেনস্তাকারী পুলিশদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি বিষয়টি সংবেদনশীল বিবেচনায় যথাযোগ্য গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগে দায়ের করার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
– মেডিভয়েস