ডেস্ক নিউজঃ রাজধানীর তুরাগ থানাধীন এলাকা হতে মেট্রো রেল প্রকল্পের মালামাল চুরির সংঘবদ্ধ চোর চক্রের ০৬ সদস্য’কে গ্রেফতার। চোরাইকৃত ৮৭৭০ কেজি বিভিন্ন ধরনের লোহা সহ ০১ টি ট্রাক উদ্ধার।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ঢাকা মহানগরীর তুরাগ থানাধীন এলাকায় সংঘবদ্ধ একটি চোরাকারবারী চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ মেট্রো রেল প্রকল্প ছাড়াও সরকারের আরো গুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের অপ্রয়োজনীয় লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন কৌশলে চুরি করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অতি চতুর চোরাই দল বিভিন্ন পন্থায় চোরাই দ্রব্য দ্রুত কেটে বহন যোগ্য করে তা বিভিন্ন ভাঙ্গারী ও চাহিদাকারী ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করে আসছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ইং ১১/১১/২০২১ তারিখ রাত ২১.৩০ ঘটিকায় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর তুরাগ নতুন বাজার খালপাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৮৭৭০ কেজি বিভিন্ন আকারের লোহা ও ০১ টি ট্রাক সহ সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী চক্রের নিন্মোক্ত ০৬ জন চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়ঃ
(ক) মোঃ হাবিবুর রহমান (৩০), জেলা- কুষ্টিয়া।
(খ) মোঃ মারুফুল ইসলাম (৩৭), জেলা- যশোর।
(গ) মোঃ বোরহান উদ্দিন (৪৫), জেলা- কুমিল্লা।
(ঘ) মোঃ সুরুজ (৫০), জেলা- কিশোরগঞ্জ।
(ঙ) মোঃ রুবেল (৩৩), জেলা-ঢাকা।
(চ) মোঃ জহিরুল ইসলাম @ রিয়াদ (৩২), জেলা- নেত্রকোনা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা পরষ্পরের যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্প ছাড়াও সরকারের আরো গুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের অপ্রয়োজনীয় লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন কৌশলে চুরির ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, তারা একটি বিশেষ সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী চক্রের সাথেও জড়িত। ধৃত আসামীরা পরস্পর যোগসাজোশে দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্প ছাড়াও সরকারের আরো গুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের অপ্রয়োজনীয় লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন কৌশলে চুরি করে কেটে বহনযোগ্য করে তা বিভিন্ন ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করে আসছিল।
অপরাধের কৌশলঃ
গত কয়েক বছর যাবত ঢাকা সহ আশপাশ জেলা সমূহে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প পরিচালিত হয়ে আসছে। উক্ত প্রকল্প সমূহের কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপকরন স্তুপ আকারে থাকা কালে একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি দল সু- কৌশলে সুবিধা বুঝে সুযোগ মতো চুরি করে তাদের পছন্দ মতো গোপন একটি জায়গায় নিয়ে এসে সেগুলো কে সহজে বহনযোগ্য করে বিভিন্ন ক্রেতাদের নিকট তা বিক্রয় করে থাকে। বর্ণিত আসামী মোঃ হাবিবুর রহমান হলো এই চক্রটির মূলহোতা। মূলহোতা হাবিবুর রহমান তার সহযোগী সুরুজ, রুবেল ও জহিরুল ইসলাম @ রিয়াদ দের সহায়তায় মেট্রোরেল সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের অপ্রয়োজনীয় লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন কৌশলে চুরি করে একটি গোপন স্থানে নিজেদের হেফাজতে রাখে। পরবর্তীতে তারা সুযোগ বুঝে উক্ত চোরাই মালগুলোকে কেটে বহনযোগ্য করে মারুফুল ইসলাম ও বোরহান উদ্দিন দ্বয়ের নিকট বিক্রয় করে।
পরবর্তীতে উক্ত চোরাইকৃত মেট্রো রেল সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের অপ্রয়োজনীয় লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন ও খুচরা মালামাল গুলো মারুফুল ইসলাম ও বোরহান উদ্দিন সুকৌশলে রাতের আধারে সকলের অগোচরে সুবিধা জনক ও বহন যোগ্য সাইজে রুপান্তরিত করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানের পুনঃ লোহা তৈরির কারখানায় বিক্রয় করে থাকে। এভাবে উক্ত চোরাই চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত মেট্রো রেল সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের অসংখ্য পরিমানের অপ্রয়োজনীয় লোহা, ইস্পাত, তার, মেশিন ও খুচরা মালামাল কৌশলে চুরি করে তা কেটে বহন যোগ্য করে বিক্রয়ের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন এবং এই ধরনের অপহরনকারীর বিরুদ্ধে র্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।