সুজন মহিনুল,বিশেষ প্রতিনিধি।।নীলফামারীর ডিমলায় নাউতারা নদীর তীব্র পানির স্রোতে উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের আকাশকুড়ি ঘাটেরপাড় ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় উজানের ডান তীর ও ভাটির বাম তীর ধসে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে ওই এলাকার একমাত্র চলাচলের মাটির রাস্তাটি ভাঙ্গতে শুরু করেছে।ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙ্গনরোধে কাজের আশ্বাস দিলেও শনিবার(২ জুলাই)পর্যন্ত কাজ শুরুই করতেই দেখা যায়নি।ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় ওই এলাকার প্রায় তিন শতাধিক পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।হুমকির মুখে পড়েছে ডিমলা টু ডালিয়ার প্রধান পাকা সড়কসহ শত বিঘা আবাদি জমিও।
সরজমিন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,
গত কয়েকদিনের উজানের ঢলে ও টানা বর্ষণে উপজেলার নাউতারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির স্রোতে নাউতারা ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের আকাশকুড়ি গ্রামের ঘাটেরপাড় ব্রিজ সংলগ্ন উজানের ডানতীরে প্রায় ৩৫০ মিটার ভাটির বাম তীরের ১৫০ মিটারের অধিক নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।হুমকির মুখে পড়েছে ডিমলা টু ডালিয়ার প্রধান পাকা সড়কটি।এতে ওই এলাকার চিলাখাল ও আনন্দ বাজার পাড়ার চলাচলের একমাত্র মাটির রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সেখানে বসবাসকারী প্রায় তিন শতাধিক পরিবার।চিড়াখাল ও আনন্দ বাজার এলাকার বাসিন্দা,কামরুজ্জামান (৪৭),আব্দুর রাজ্জাক (৬০),সমেজ আলী(৬০),আমিনুর(৪৫),আবু বক্কর(৫৫), জাহাঙ্গীর ইসলাম (৪০),সিরাজুল (৩৩),ময়না আক্তার(৩০),স্বপ্না বেগম(২০),সহিদুল ইসলাম (৩৮),এন্তাজ(৫৫)অভিযোগ করে বলেন,প্রতি বছর নদীর ভাঙ্গনে উজানে পুর্বদিক থেকে পশ্চিমে ও ভাটিতে পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে গতিপথ পরিবর্তন করে প্রতিনিয়তই সরে আসছে নদী।বর্তমানে নদীর ভাটির বামতীর নদীগর্ভে বিলিন হবার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গত কয়েকদিন ধরে চলাচলের একমাত্র মাটির রাস্তাটি ভাঙ্গতে শুরু করেছে।স্থানীয়রা নিজেরাই বালু-মাটি দিয়ে কিছু ভাঙ্গন অংশ মেরামতের চেষ্টা করলেও নতুন করে নতুন নতুন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি আমরা।ইতি মধ্যে কিছু আবাদি জমিও নদীতে বিলিন হওয়ায় কৃষকরা তাদের জমি রক্ষায় নানানভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।উজানেও নদীর ডানতীরে ব্যাপক ভাঙ্গনে ডিমলা টু ডালিয়া প্রধান সড়কটি যে কোনো মুহূর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।আমাদের দিন-রাত প্রতি মূহুর্ত আতঙ্কের মাঝে কাটছে।তারা জানান,গত ২৯শে জুন সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি হিসেবে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের(পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী রকি ইসলাম ও ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙ্গনরোধে কাজ শুরুর আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো কাজ শুরু করা হয়নি।এখোনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এলাকার মানুষেরা যদি কোনো বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হন তবে এর দায় কে নিবেন।তাই আমরা চাই এলাকার তিন শতাধিক পরিবার, শত-শত আবাদি জমি ও ডিমলা টু ডালিয়া প্রধান সড়ক রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খুব দ্রুত স্থায়ী সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
আমাদের কপাল পোড়ার পর কর্তৃপক্ষ যেনো মায়া কান্না দেখানোর অপেক্ষায় না থাকেন।
দ্রুত ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনায় জোড়ালো দাবি জানান তারা।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাউতারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আমি পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছি।খুব দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এলাকাবাসীর ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের(পাউবো)নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বলেন,বিষয়টি আমি জেনেছি।খুব দ্রুত আমি সরজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
তবে এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেনের ব্যবহৃত সরকারি(০১৭৩৩৩৯০৬৬৩)নম্বরে কল করা হলে তিনি রিসিভ না করায় ও ফিরতি কল না দেয়ায় তার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।