সমাজের কন্ঠ ডেস্ক – নন ক্যাডারদের সংকট নিরসন হতে না হতেই ফরিদপুরে চিকিৎসকদের উপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা।চিকিৎসকদের কর্মস্থলে নিরাপত্তার বিষয়ে অধিদপ্তর , মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী এখন আর সিদ্ধান্ত নেওয়া দূরে থাক মোটেও ভাবে না, সমমর্মিতা প্রকাশ করে না।তাদের এ আচরণ দীর্ঘদিনের। এর পাশাপাশি ইন্টার্ন চিকিৎসক থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক -কারো কোন প্রতিবাদ বা প্রতিক্রিয়া নাই। প্রতিকারকারী ও আক্রান্ত হওয়া গোষ্ঠী উভয় যখন পাশাপাশি নীরব থাকে তখন আক্রমণকারী সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠবে –এটাই বাস্তব। ফরিদপুরে সেই বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটেছে। অতীতের বহু ঘটনা বাদ দিলে সদ্য কক্সবাজার , সিলেট, ময়মনসিংহ হয়ে সন্ত্রাসী আক্রমণ এখন ফরিদপুরে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উপর।
অপমান বা শারীরিক লাঞ্ছনা যখন সহনীয় হয়ে যায় তখন রাষ্ট্র সরকার, মন্ত্রণালয় , অধিদপ্তর প্রতিকারের কোন উদ্যোগ নেয় না। চিকিৎসকদের কর্মস্থল, হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্র ও ব্যক্তিগত চেম্বার নিরাপত্তা দেওয়ার এজেন্ডা মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ে ফাইল বন্দী হয়ে পড়ে আছে প্রায় এক দশক ধরে। আমলারা ঐ ফাইলের গিট না খুললে মন্ত্রী খুলতে পারেন না। অপরদিকে আমলারা চাপে না পড়লে ঐ ফাইলের গিট কখনই খুলবে না । চিকিৎসকরাও কোনপ্রকার চাপ প্রয়োগ করতে মাঠে নামে নি । সরকারের দায় নেই ।কেবল মাঝে-সাঝে এখানে-ওখানে চিকিৎসক সমাবেশে বক্তৃতায় মায়া কান্না দেখা যায়। চিকিৎসকরা সন্তুষ্ট , করতালিতে মুখরিত করে। মন্ত্রীরও মুখমণ্ডলে তৃপ্তির ছাপ ।
চিকিৎসকরা স্বীয় লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদমুখর না হওয়ার কারণে একের পর এক ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। অপমান , লাঞ্ছনায় যারা প্রতিবাদ করে না – তাদের পাশে কেউ দাঁড়ায় না ,কেউ থাকে না । যা হারানোর ভয়ে চিকিৎসকরা প্রতিবাদ করছে না , সেই বাস্তবতায় সরকারও নীরব থাকছে। সকল লোভ লালসা ত্যাগ করে ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মস্থলের নিরাপত্তার দাবী উত্থাপন করলে, দাবী পূরণ হতে সময় নেবে না । যদি কিনা মাঝখান থেকে বিশ্বাসঘাতকের ভূমিকায় নেতৃত্বের আবির্ভাব না ঘটে।
সকল সীমাবদ্ধতা পদদলিত করে বিএমএ –কেই এ অধিকার আন্দোলনের সূচনা করতে হবে। সেই সাথে রাজধানী ভিত্তিক একটি সম্মিলিত চিকিৎসক আন্দোলনের জন্ম হওয়া প্রয়োজন । তা না হলে মফঃস্বল বা তৃণমূলে আন্দোলনের হাওয়া লাগে না ।
ফরিদপুরে ইন্টার্ন সহ বাংলাদেশের সকল ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এ মুহূর্ত থেকে আন্দোলনের সূচনা করলে সকল চিকিৎসক তাদের সাথে অংশগ্রহণ করতে পারে । ইদানীং চিকিৎসকদের আন্দোলন বা প্রতিবাদ দূরে থাক , কথা বলতে গেলেও সরকার বিরোধী হয়ে যায় কিনা – এরূপ ভীতি কাজ করে প্রতিনিয়ত । এমনকি সামাজিক প্রচার মাধ্যমে সমর্থন বা লাইক দিতেও ভয় পায়। চিকিৎসকদের কর্মস্থলের আন্দোলন সরকার বিরোধী নয় বরঞ্চ সরকারের পক্ষে একটি দাবী বা আন্দোলন। কোন সরকারই চায় না চিকিৎসকদের কর্মস্থল অনিরাপদ থাকুক।
ডা. বাহারুল আলম। প্রখ্যাত পেশাজীবি নেতা। লোকসেবী চিকিৎসক। কলামিস্ট। বিএমএর সোচ্চার কন্ঠ ।