মোঃহাসান চৌধুরী নবীগঞ্জ প্রতিনিধি –
অস্তিত্ব সংকট দেখা দিয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের মধ্যে। হবিগঞ্জ-১(নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মুনিম চৌধুরী বাবুর সাংগঠনিক কার্যক্রমে ব্যর্থতার কারণেই জাতীয় পার্টি ছেড়ে গণফোরামে যোগদান করছেন। ইতোমধ্যে কয়েক দফায় জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার পুত্র অর্থনীতিবীদ ড. রেজা কিবরিয়ার হাতে ফুলে তোড়া দিয়ে যোগদান করছেন। এছাড়াও স্থানীয় গণফোরামের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে যোগদান প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সাংগঠনিক সূত্রে জানা যায়, আরো শতাধিক নেতাকর্মী গণফোরামে যোগ দিচ্ছেন ? নেতাকর্মীরা জানান, তারা সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর দলটির বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে গৃহবিবাদে জড়িয়ে পরাসহ স্থানীয় নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে দলের উপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না। এছাড়া নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মুমিন বাবু কর্তৃক নবীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব প্রয়াত মাহমুদ চৌধুরীর স্থলে সাংগঠনিক ভাবে সদস্য সচিব নির্বাচিত না করে তাঁর একক সিদ্ধান্তে মনোনীত ব্যক্তিকে উক্ত দায়িত্ব প্রদান করাসহ নানা অভিযোগে ক্ষোব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। অপরদিকে স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী সংবিধান প্রনেতা ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণফোরামের সভাপতি ডঃ কামাল হোসেন ও নবীগঞ্জের কৃতি সন্তান তথা সিলেট বিভাগের গর্ব গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়ার উপর আস্থা রেখে গণফোরামের রাজনৈতিতে অনুষ্ঠানিক যোগ দিচ্ছেন তারা। এদিকে নবীগঞ্জে রাজনৈতিক অঙ্গন তথা সচেতন মহলে গুঞ্জন রয়েছে, জাতীয় পার্টি থেকে গণফোরামে নেতাকর্মীদের যোগদানের নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন নবীগঞ্জ পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা যুবসংহতির সভাপতি মুরাদ আহমদ। যদিও এব্যাপারে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে গুঞ্জনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। ইতিমধ্যে গণফোরামে যোগদান করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্যরা হলেন, নবীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান কাপ্তান,নবীগঞ্জ পৌর জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ও নবীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় কৃষক পার্টির সাবেক সভাপতি কমান্ডার-এম এ খালেক,নবীগঞ্জ উপজেলা যুবসংহতির আহবায়ক ও জেলা কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল আমীন পাঠান ফুল, নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সহ-সভাপতি হাজী সিরাজুল ইসলাম(প্রাক্তন মেম্বার),নবীগঞ্জ পৌর জাতীয় পার্টির সহসভাপতি মোঃ আব্দুল আজিজ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফতেহ আলম,নবীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় কৃষক পাটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এখলাছ আহমদ,কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়ন জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক জিয়াউর রহমান,দেবপাড়া ইউনিয়ন জাতীয় যুব সংহতির যুগ্ম আহবায়ক বিলাল আহমদ,সদস্য সচিব জাকির হোসেন,ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক সাজ্জাদুর রহমান, দীঘলবাক ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা মোশাহিদ আলী,করগাঁও ইউনিয়ন জাতীয় যুব সংহতির সাবেক সভাপতি মোতাব্বির হোসেন চৌধুরী প্রমুখ। উল্লেখিত যোগদান প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন কেন্দ্রীয় গণফোরাম সদস্য আবুল হোসেন জীবন ও তার নেতৃত্বে ড. রেজা কিবরিয়ার ঢাকাস্থ গুলশানের বাসভবনে এসব আনুষ্ঠানিক যোগদান অনুষ্ঠিত হয়। যোগদানের এব্যাপারে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘সুযোগ পেলে নবীগঞ্জ-বাহুবলবাসীর উন্নয়নে ও প্রত্যন্ত জনপদের মানুষের পাশে থাকতে চাই।’ এসময় তিনি গণফোরামে যোগদানকৃত নেতাকর্মীদের স্বাগত জানান। জাতীয় পার্টি থেকে গণফোরামে যোগদানকারী নেতাদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, এরশাদ ছিলেন জাতীয় পার্টির মূলশক্তি তথা জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী কিন্তু পল্লীবন্ধু এরশাদ মারা যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে গৃহবিবাদে জড়িয়ে পরাসহ স্থানীয় নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে দলের উপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না। তাই সঙ্গত কারণে জাতীয় পার্টির রাজনীতির মাধ্যমে নবীগঞ্জ-বাহুবলে মানুষের কল্যাণে অর্থবহ ভূমিকা পালন করার সুযোগ নেই। তারা আরো জানান, সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম শাহ এএমএস কিবরিয়া নবীগঞ্জের কৃতি সন্তান। তাঁর যোগ্য সন্তান আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া। গত সংসদ নির্বাচনে তিনি নবীগঞ্জ-বাহুবল আসনে সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়ে এলাকার মানুষের আস্থাভাজন হয়েছেন। তাই তাঁর সাথে রাজনীতি করার জন্যই গণফোরামে যোগ দিচ্ছেন তারা।