নিরব তালুকদার – অনেক আশা প্রত্যাশার পর প্রতিষ্ঠিত হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের কয়েক বছরের মধ্যেই ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগে আলোচনা-সমালোচনা গোটা জেলা জুরে।অভিযোগ,২০১৮ সালে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয়ের ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ভ্যাট ও আয়কর খাতে সরকারি কোষাগারে জমা হয় ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ৯৭ হাজার ৭শ’ ৪৮ টাকা। মালামাল ক্রয় বাবত ১৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮১ হাজার ১শ’ ৯ টাকা উত্তোলন করে নেয় ঠকাদারী প্রতিষ্ঠাগুলো। ৬০ হাজার টাকার কালার প্রিন্টারের দাম পড়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ৪২ হাজার টাকার ল্যাপটপ কেনা হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকায়। ৩৯ হাজার টাকার রেফ্রিজারেটর ৮৫ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। এমনকি মানবদেহের মেডিকেল চার্ট; বাজারে যার দাম ৫০০ টাকা, তা কেনা হয়েছে ৭ হাজার টাকায়।হবিগঞ্জের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে এভাবে বাজারদরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে কেনা দেখানো হয়েছে, কম্পিউটার, আসবাপত্র, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি । এসব সামগ্রী কেনায় ব্যয় দেখানো হয়েছে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা ।কিন্তু যে সরঞ্জাম ক্রয় করা হয় বাস্তবে সেগুলোর বাজার মূল্য ৫ কোটি টাকার বেশি নয় বলে দাবি করেন দরপত্র প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা।সেই হিসেবে বাঁকি প্রায় ৯ কোটি টাকার পুরোটাই হয় ভাগ-বাটোয়ারা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার জরউঠে পুরো জেলা জুরে ।বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রচার করলে নড়েচড়ে বসে মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।এদিকে, দূর্নীতির বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হবিগঞ্জ কার্যালয়ের একটি টিম।দিনব্যাপী তাঁরা পুরো মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন এবং প্রতিটি ক্রয়কৃত জিনিসের উপর তদন্তকরেন।এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এরশাদ মিয়া বলেন, ‘দুদকের তদন্ত শুরু হয়েছে। পুরোপুরি তদন্ত শেষ করে এ বিষয়ে জানানো হবে।কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ গঠনের জন্য হবিগঞ্জ দুদকে চিঠি প্রেরণ করা হয় ।হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ১৫ কোটি টাকার দুর্নীতি,তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে কমিটি গঠন করে ।এছাড়াও নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে,হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে।অভিযোগ তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যান বিভাগের যুগ্ম সচিব (নির্মাণ ও মেরামত অধিশাখা) মো. আজম খানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা ও পরিবার কল্যান বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের দুর্নীতি তদন্তে কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।অভিযোগ , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে প্রতিষ্ঠিত ওই মেডিকেল কলেজে, প্রিন্টার, ল্যাপটপ, চেয়ার ও সাউন্ড সিস্টেমসহ প্রয়োজনীয় আসবাপত্র বাজারদরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে কেনা হয়েছে। এ অবস্থায় মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নামে প্রতিষ্ঠিত কলেজটির প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরের মধ্যেই দুর্নীতি অনিয়ম টেন্ডারবাজিসহ নানা অভিযোগ উঠে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর বছরের মধ্যেই এ ধরনের অভিযোগকে কলেজটির এগিয়ে যাওয়ার পথে বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের পরপরই, মন্ত্রণালয় এমন খবরের সত্যাসত্য নির্ণয়ের জন্য এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে স্হানিয় পত্র-পত্রিকায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে নজিরবিহীন দুর্নীতির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হবিগঞ্জের নাগরিক সমাজ।এতে বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ ।