যশোর প্রতিনিধিঃ যশোরে প্রকাশ্যে গুলি করে হোসেন আলী তরফদার (৫২) নামে এক আনসার সদস্যকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। শনিবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার হাশিমপুর বাজারে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত আনসার সদস্য হোসেন আলী তরফদার (৫২) যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুর তরফদারপাড়া এলাকার আরশাদ আলী তরফদারের ছেলে। সাবেক চরমপন্থী সদস্য হোসেন আলী ১৯৯৯ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে আত্মসমর্পণ করে অস্ত্র জমা দিয়ে আনসার ব্যাটালিয়নে যোগ দিয়েছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে হোসেন আলী বাড়ি থেকে হাশিমপুর বাজারে বাজার করতে আসেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি বাজারের মোশাররফের চায়ের দোকানের সামনে যান। এ সময় সন্ত্রসীরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
হোসেন আলী তরফদারের ভাতিজা সিদ্দিকুর রহমান জানান, তার চাচা হোসেন আলী ঢাকায় আনসার ব্যাটালিয়নে চাকরি করেন। ছুটি নিয়ে ৫/৬ দিন আগে তিনি বাড়িতে এসেছেন। সকালে তিনি বাজারে আসার পর কে বা কারা তাকে গুলি করলো তা তারা বুঝতে পারছেন না।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আলীম হোসেন বনি জানান, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে হত্যা করেছে; এমন খবর পেয়ে তিনি বাজারে ছুটে আসেন। বাজারে গোলাগুলির সঙ্গে সঙ্গেই দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা সবাই সরে পড়েন। কারা কীভাবে এসে গুলি করে চলে গেলো তা এখনও জানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, হোসেন আলী তরফদার (৫২) যুবক বয়সে চরমপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সরকার চরমপন্থীদের জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দিলে তিনি আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময় যশোর টাউন হল ময়দানে চরমপন্থীদের আত্মসমর্পণের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের হাতে অস্ত্র সমর্পণ করে আত্মসমর্পণ করেন হোসেন আলী। এরপর তিনি আনসার ব্যাটালিয়নে চাকরি পান। চাকরির সূত্রে তিনি ঢাকাতেই থাকতেন। চরমপন্থী সংগঠনের পুরোনো বিরোধেও তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা হোসেন আলীকে গুলি করে হত্যা করেছে। ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আনসার সদস্য বলে শুনেছি। হত্যাকাণ্ডের কারণ এবং এতে কারা জড়িত তা উদ্ঘাটনে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। পুলিশ জড়িতদের চিহ্নিত করে আটকের জন্য অভিযান শুরু করেছে।