কলারোয়ায় ঈদ উপলক্ষে দোকান গুলোতে উপচে পড়া ভিড়।ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতারা

0
3
ফিরোজ জোয়ার্দ্দার-ঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় রমজানের শেষ মুহূর্তে পৌর বাজারে জমে উঠেছে ছোট বড় মিলে বিভিন্ন বয়সী ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড়। পবিত্র ঈদ-উল ফিতর আসন্ন। বুধবার (২৯ মে) রমজানের শেষ দশকে পৌরসদরের থানা মসজিদের গলি থেকে শুরু করে চৌরাস্তা মোড় হয়ে কাঠের ব্রীজ পর্যন্ত আবার চৌরাস্তা মোড় হতে পশু হাট মোড় পর্যন্ত তিল পরিমান ঠাই নেই ক্রেতাদের জন্য। তাছাড়া পাল্লা দিয়ে চলছে টুপি, আতর আর জায় নামাজের দোকানে চলছে ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড়। ঈদের দিন সকালে মুসুল্লীরা ঈদগাহে যাবেন নতুন পাঞ্জাবি পরে, তাতে আতরের সুবাস আর মাথায় টুপি না থাকলে কি মানায়! নতুন পোশাক কেনার পর ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন টুপি, আতর আর জায়নামাজের দোকানে। থানা মসজিদ সড়কে টেইলার্স দোকানসহ ফুটপাতের দোকান গুলোতে বিভিন্ন ডিজাইনের মেয়েদের তৈরী করা পোশাক ও ছিট কাপড়সহ আতর- তসবির বিক্রিবাট্টা বেশ জমে উঠেছে। বিভিন্ন দামের বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধীর সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে টুপি, তসবী, সুরমা ও জায় নামাজ। দোকানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোজার মাসের শুরু থেকেই শেষ পর্যন্ত টুপি- আতর- তসবীর বিক্রি বেড়ে গেছে। আর কেনাবেচার এই রমরমা ব্যবসা চলবে ঈদের নামাজের আগ পর্যন্ত। আতর টুপির দোকান ঘুরে স্বত্বাধিকারীরা জানান, আবা, মাথার বেড়ি, জায়নামাজ, টুপি ছাড়াও গুলবাহার, গুল রেডরোজ, লায়লা, বেলি, অ্যারাবিয়ান, জুঁই, বকুল, মর্নিং কুইন, চামেলি, জেসমিন, গোলাপ বাহার, শাহি দরবারসহ দেশী- বিদেশী আতর পাওয়া যাচ্ছে। কম দামের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি বিক্রি চলছে, জান্নাতুল ফেরদাউস, রজনীগন্ধা, বকুল আর বেলিফুলের আতর। প্রতি তোলার দাম পড়ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। এ ছাড়া বডি স্প্রের মতো ওয়ান ম্যান শো, আল হারমাইন মদিনা, মেইজ, সানডে, এক্সের চাহিদাও রয়েছে অনেকের। বডি স্প্রের মতো এসব সুগন্ধী কিনছেন মূলত তরুণেরা। মধ্যম দামের মধ্যেও রয়েছে নানা ধরনের আতর। বেশী দামের আতরের মধ্যে রয়েছে ২০ হাজার টাকা তোলা দরে আল হারমাইন শেখ, সৌদি আরবের ১২ হাজার টাকা প্রতি তোলা দরে আতর। বয়স্ক ক্রেতা ইয়াকুব্বর আলী বলেন, ছেলে, নাতি আর আমি সবাই মিলে আতর মেখেই ঈদগাহে যাব। আতরের দোকান দেখে মিলল দুই ভাইয়ের পছন্দের টুপি তাঁরা বেছে নিচ্ছিলেন। ঈদের কেনাকাটা করা সবিই শেষ। তবে ঈদ গাহের ময়দানে আতর মেখে গেলে সুন্নতি পাওয়া যায়। আতর মাখা সুন্নত। আমাদের শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে আতর মাখতেন আর বাচ্চাদেরকে আতর মাখিয়ে ঈদের জামাতে নিয়ে যেতেন। গ্রামের বাড়ি যাবেন বলে পাশের দোকানে পাথরের পুঁতির তসবি আর জায় নামাজ কিনলেন এক দম্পতি। টুপির দোকানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ১০ টাকা থেকে শুরু করে এবং ভাল পুঁতির কাজ করা টুপি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। গোল টুপির দাম ৫০ থেকে ৫০০ টাকা। বাচ্চাদের চুমকি বসানো টুপি মিলবে ১০০- ২৫০ টাকায়। সোনালী সুতার কাজ করা টুপি পাবেন ৭০০ থেকে ১৩০০ টাকা। আর সাধারণ টুপির দাম পড়বে ৫০ থেকে ১২০ টাকা। টুপির পাশাপাশি অনেকে হাজি রুমাল ব্যবহার করে থাকেন। দোকানগুলোতে বাংলাদেশ ছাড়াও দুবাই, কাশ্মীর ও চায়নার হাজি রুমাল পাওয়া যাচ্ছে ১২০ টাকা থেকে সাড়ে পাঁচশ’ টাকার মধ্যে। ঈদে আতর শৌখিনতার প্রতীক। কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সামনে ও আশপাশ এলাকা এম আর সুপার মার্কেট, হোসেন সুপার মার্কেট, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, আনিছ সুপার মার্কেট, এম আর ফাউন্ডেশন মার্কেটে ঈদ বাজার করতে আসা উপজেলার কবীরুল ইসলামসহ তার পরিবারের সদস্যরা জানান, ঈদের দিন সকালে নতুন পায়জামা-পাঞ্জাবীর সঙ্গে দরকার পড়বে আতর, টুপি, তসবি ও জায়নামাজ। তাই ঈদের কেনাকাটায় শেষ মুহূর্তে এসব দোকানে ভিড় করছেন অনেকেই। এদিকে থেমে নেই কাপড়ের দোকানগুলো। প্রতি দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখে মনে হয় ঈদ চলে এসেছে। ছোট বড় তরুন যুবক যুবতীরা তাদের পছন্দ মতো জামা কাপড়, শাট প্যান্ট ও ছোট ছোট বাচ্চাদের কাপড় চোপড় কেনা কাটায় ব্যস্ত। এই ঈদে শিশু মেলা ও বেবী মেলার মালিক রবিউল ইসলাম এবং আনারুল ইসলাম জানান, মেয়েদের জন্য আকষর্ণীয় পোশাক হলো লন্ডনের গাউন্ড পোশাক। যার দাম ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আর বাচ্চাদের পোশাকের মধ্য অন্যতম আলমস্ হোসিয়ারি। যার দাম ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত৷ পাশে ঐশি ফ্যাশান এন্ড জেন্টস কালেকশনের মালিক সাগর হোসেন জানান, বাচ্চাদের সব ধরনের পোশাকসহ ছেলেদের শাট প্যান্ট, কাবলি ও কাতুয়া পোশাক বেশী আকষর্ণীয়। এর মধ্যে কাতুয়া ৫০০ থেকে ১ হাজার ও কাবলি ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া জুতার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন বয়সের ক্রেতারা পছন্দ মতো জুতা ক্রয় করছেন। সব মিলে ঈদকে সামনে রেখেই কলারোয়া পৌর বাজারে দোকান গুলোতে জমে উঠেছে ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here