হারুন অর রশিদ – মঙ্গল শোভাযাত্রা” ও “পহেলা বৈশাখ” সম্পর্কিত আমার ১৩টি প্রশ্ন রয়েছে।
উত্তর দিতে পারবেন কখনো!!!😏😏😏
১. মঙ্গল শোভাযাত্রা সর্বপ্রথম শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। কিন্তু বলা হচ্ছে এটা বাঙালীর হাজার বছরের সংস্কৃতি। এটা জাতির সঙ্গে তথ্যগত প্রতারণা নয় কি?
আমি নেহাতই অংকে দূর্বল, হিসাব-নিকাশ তেমন একটা বুঝিনা। কিন্ত এটা বুঝি যে, ২৮ বছর=১০০০ বছর নয়।🤔🤔🤔
২. হাজার বছর ধরে কি বাঙালী কৃষকসমাজ পহেলা বৈশাখের দিনে মূর্তি নিয়ে মিছিল করত??
হাজার বছরের কথা না হয় বাদই দিলাম।
সম্রাট আকবার খাজনা আদায়ের সুবিধার্তে ১৫৮৪ সাল থেকে বাংলা সাল চালু করেন। ১৫৮৪ সাল থেকে আজ অবদি অর্থাৎ ৪৩৩ বছর ধরে বাঙ্গালী কৃষকসমাজ পহেলা বৈশাখের দিনে কি কখনো রাস্তায় মূর্তি নিয়ে মিছিল করেছিল??🤔🤔🤔
৩. পেঁচার মূর্তি, বাঘের মূর্তি, জীব জানোয়েরের মূর্তি মানুষের মঙ্গল-অমঙ্গল করার কোন ক্ষমতা রাখে না। মঙ্গল-অমঙ্গলের মালিক একমাত্র আল্লাহ সুবহানাতায়ালা। এসব মূর্তিকে আল্লাহর স্থলাভিষিক্ত করা নিঃসন্দেহে শিরক, কুফরি।
এখন কেউ কি প্রমাণ করে দিতে পারবেন যে, মূর্তিকে মঙ্গল প্রদানকারী রূপে গণ্য করলে কেউ কাফির-মুশরিকে পরিণত হবে না??🤔🤔🤔
৪. সাধারণত মূর্তি বানানো, মূর্তি নিয়ে মিছিল করা হিন্দু ধর্মের সংস্কৃতি। হিন্দু ভাই-বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আপনাদের ধর্মগ্রন্থগুলোতে কি কোথাও পহেলা বৈশাখের দিন মূর্তি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা করার কোন নির্দেশনা আছে?? 🤔🤔
যদি থাকে তাহলে তো এটা আপনাদেরই সংস্কৃতি, আপনারা পালন করবেনই। আর যদি না থাকে তাহলে কেন এমনটা করছেন??🤔🤔🤔
৫. রাস্তায় মূর্তি নিয়ে মিছিল করলে দেশে মঙ্গল আসবে- এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানতে চাই। (একই প্রশ্ন বিগত চার বছর ধরে করে আসছি, এখনও এর উত্তর পাইনি। উত্তর না পেয়ে আমি অত্যন্ত হতাশ।)😶😶😶
৬. বঙ্গদেশীয় মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনস্ক, নাস্তিক, সেক্যুলার ও সংস্কৃতিমনারা বরাবরই কূসংস্কারের বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ করে আসছে। তাদের ও আমাদের
(ইসলামপন্থী) দৃষ্টিতে ঝাড়ু দেখলে অমঙ্গল হয়- এটা কূসংস্কার, পিছন থেকে ডাক দিলে অমঙ্গল হয়- এটা কূসংস্কার, বাচ্চার কপালে কালো টিপ দেয়া কূসংস্কার ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনস্ক, নাস্তিক, সেক্যুলার ও সংস্কৃতিমনাদের নিকট কেন মূর্তি নিয়ে মিছিল করলে মঙ্গল হবে- এটা কূসংস্কার বলে বিবেচিত হবে না??
কিন্তু দেখা যাচ্ছে এরাই মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনে সকলের চেয়ে অগ্রগামী। এ কেমন ডাবল স্ট্যান্ডবাজি রে ভাই!!🤐🤐🤐🤐
৭. রবিঠাকুরের ভাষায় “এসো হে বৈশাখ এসো এসো….”
এখানে বৈশাখ কি মাস নাকি অন্যকিছু?? হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার পুত্র হল দক্ষা। আর দক্ষার মেয়ে বিশাখা। আর এই বিশাখা থেকেই বৈশাখ। ব্রাহ্মসমাজের প্রতিনিধিত্বকারী কবিগুরু যদি বিশাখা দেবীর কাছে মুমূর্ষুরে উড়িয়ে দেবার প্রার্থনা করেন, বৎসরের আবর্জনা দূর করে দেবার প্রার্থনা করেন, গ্লানি মুছে যাবার, জরা ঘুচে যাবার প্রার্থনা করেন তাহলে সেটা অবশ্যই দোষের কিছু নয়।
দোষ তখনই যখন এটা সুকৌশলে মুসলিম সমাজে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এরপরও কি আপনি বলবেন, “আমার ঈমান কি এতটাই ঠুনকো নাকি যে সামান্য গান বাজনা করলেই ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে?”😥😥😥
৮. ৪০০ টাকার ইলিশ ১৫০০ টাকায় কিনে খেলে দেশের অর্থনৈতিক অবক্ষয়, ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি সহ অসংখ্য অর্থনৈতিক সমস্যা নেমে আসতে পারে। জাটকা ধরার কারণে ভরা মৌসুমে ইলিশের হাহাকার নেমে আসাও অসম্ভব কিছু নয়। এত ক্ষতির কথা জানার পরেও কি পহেলা বৈশাখে ইলিশ মাছ খাওয়া উচিৎ??😶😶😶😶
৯. আমরা বাঙালীরা তো প্রায় প্রতিদিনই ভাত-মাছ খেয়ে থাকি। তাহলে বছরের প্রথমদিনে ভাত-মাছ খেয়ে বাঙালী সাজার কি আদৌ কোন যৌক্তিকতা আছে??
১০. শরৎচন্দ্রের ভাষায় এখন দিগন্তজোড়া মাঠখানা জ্বলিয়া পুড়িয়া ফুটিফাটা হইয়া আছে (তাইতো দেখি এখন বাঙ্গিতে বাজার একেবারে সয়লাব হয়ে আছে)। এই ফুটিফাটা গরমের মধ্যদুপুরে ঢাকার রাস্তায় মিছিল করলে আপনার উপর বেশ কিছু বিপদ নেমে আসতে পারে। অতি ক্ষুদ্র, ভাঙাচোরা মেডিকেলিয় জ্ঞান দ্বারা বুঝি যে, আপনার হিট স্ট্রোক, হাইপারথারমিয়া, হিট এক্সহাশন হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘামার কারণে ডিহাইড্রেশন ও ইলেক্ট্রোলাইট লস হয়ে আপনি মারাও যেতে পারেন। অতএব রাস্তায় মিছিল করে নিজের জীবনকে মৃত্যুর মুখোমুখি ঠেলে দেয়া কি মোটেও ঠিক হবে??😇😇😇
১১. মনে করুন আপনার বাবার তীব্র বুকে ব্যাথা। উনাকে এক্ষুনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বা বারডেম এর সিসিইউ তে ভর্তি করাতে হবে। এমতাবস্থায় শাহবাগ মোড়ের মঙ্গল শোভাযাত্রার কারণে যদি আপনার বাবা একটু দেরীতে হসপিটালে পৌঁছায় এবং মৃত্যবরণ করে তাহলে এই অমঙ্গলের দায়ভার কি মঙ্গল শোভাযাত্রাওয়ালরা নিবে??😎😎
১২. বর্ষবরণের মূল উপাদান হল গান-বাজনা। ইসলামে গান বাদ্যযন্ত্র হারাম। কেউ কি ইসলাম থেকে প্রমাণ করতে পারবেন যে আগামীকাল রমনা বটমূলে গেলে কোন পাপ হবে না??😣😣😣
১৩. আগামীকাল রাস্তায় পর্দাহীন নারীর কারণে বের হওয়াটাই মুশকিল হয়ে পরবে। পর্দাশীল হোক আর পর্দাহীন হোক কোন নন মাহরাম নারীর দিকে একবারের বেশি তাকানোটাই পাপের কারণ। এখন কেউ কি গ্যারান্টি দিতে পারবেন আগামীকাল বের হলে আমাদের কোন পাপ হবে না??🤥🤥🤥
উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম…..🤔🤔🤔