নেওয়াজ মাহমুদ নাহিদ, লালপুর (নাটোর): শীতের জীর্ণতা সরিয়ে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। শীতের খোলসে থাকা বসন্তের ফুল ফুটতে শুরু করে এই ফালগুনেই। বসন্তের আগমনে প্রকৃতির সাথে তরুণ হৃদয়েও লাগে দোলা। আজ পহেলা ফাল্গুন, জীবনকে রাঙিয়ে দেয়ার দিন। সত্যিই বসন্ত ধরা দেয় নানাভাবে। আজ বসন্তের আগমনে কোকিলের কুহুতানে মুখরিত হবে শুধু শ্যামল সবুজ প্রান্তর নয়, এই শহরও। আর শুকনো পাতারা ঝরে গিয়ে জন্ম নেবে কচি নতুন পাতার। সেই পত্রপল্লবে, ঘাসে ঘাসে, নদীর কিনারে, কুঞ্জ-বীথিকা আর ওই পাহাড়ে অরণ্যে বসন্ত আজ দেবে নবযৌবনের ডাক। আজ প্রাণে প্রাণে মিলবে প্রাণ। ফুলের সৌরভে মেতে উঠবে চারিপাশ। বসন্তের রং ‘বাসন্তী’কে সঙ্গে নিয়েই শুরু হবে দিনের শুরু। গাঁদা ফুলের রঙেই আজ সাজবে তরুণীরা। পরবে বাসন্তী রঙের শাড়ি। খোঁপায় গুঁজবে ফুল, মাথায় টায়রা আর হাতে পরবে কাচের চুড়ি। তরুণরাও বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবি বা ফতুয়া পরে নামবে বাংলার পথে-ঘাটে। বসন্ত মানেই কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা। পলাশ-শিমুলের রঙে রাঙিয়ে নেবেন মন। হয়তো বসন্তের বিকেলটা বা সন্ধ্যাটা প্রিয় মানুষটির সঙ্গে কাটিয়ে হবেন পরমসুখী। তরুণীরা বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে প্রকৃতির কোলে নিজেকে সপে দিতে চাইবে। অপরদিকে বসন্তের উদাস হাওয়ায় তরুণেরা নিজেকে প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে প্রকৃতির মন কাড়তে চাইবে। বসন্ত যেন মানব মন আর প্রকৃতির রূপ প্রকাশের লীলা-খেলা। বসন্তকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় মেলা, সার্কাসসহ নানা বাঙালি আয়োজনের সমারোহ থাকবে। ভালোবাসার মানুষেরা মন রাঙাবে বাসন্তি রঙে। শীতের সঙ্গে চলে বসন্তকালের পিঠা উৎসব। মধুর বসন্ত এসেছে, বইছে প্রাণ উতলা করা দক্ষিণা হাওয়া। ঋতুরাজের আগমনী বার্তা জানিয়ে ফুটেছে পলাশ। টিয়া-মৌটুসির খুনসুটি বলে দেয়, এসেছে ফালগুন। বসন্তে ফুটেছে শিমুল। শীতে ঝরে পড়েছে পাতা। ন্যাড়া গাছের রিক্ততা দূর করে রক্তরাঙা শিমুল কুঁড়ি এসেছে ফালগুনে। পাখির ঝাঁকও যেন মুগ্ধ এই সৌন্দর্যে। নগর সভ্যতা সবুজ বনানী কেড়ে নিলেও টিকে থাকা গাছগুলো যেন বসন্তের সৌন্দর্য নিয়ে উজার করছে নিজেদের। এ ঋতুতে বিবর্ণ প্রকৃতি, ফিরে পায় প্রাণ।