ডা. শাহরিয়ার আহমেদঃ ডাকঘর, ডাকবাক্স, ডাকপিয়ন আর চিঠি নিয়ে যুগ যুগ ধরে লেখা হয়েছে কত হাজার হাজার গান, গল্প, উপন্যাস ও কবিতা। কত মা-বাবা, ভাই-বোনের কান পড়ে থাকতো ডাকপিয়নের সাইকেলের বেলের দিকে। পাড়ায় মহল্লায় ডাকপিয়ন ঢুকলেই মানুষ এসে ভিড় জমাতেন। তার নামে কোনো চিঠি আছে কিনা, জানতে। দিনের পর দিন একটি চিঠির অপেক্ষায় থাকতেন তারা। কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সেই কালজয়ি গান ‘রানার ছুটেছে তাই ঝুম ঝুম ঘন্টা বাজছে রাতে রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে… আজ সেই রানারও নেই, কালের বিবর্তন এ হারিয়ে গেছে ডাক বাক্স।
ঝড় বৃষ্টি বাদল, শীত, গ্রীষ্ম উপেক্ষা করে দিনের পর দিন ভয় ডরহীনভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে সে। কার অপেক্ষায়? প্রেয়সী, প্রেমিক, সন্তান, স্বামী, স্ত্রী, বন্ধু কার অপেক্ষার প্রহর গুনছে সে। কিন্তু তার অপেক্ষার প্রহর যেন আর শেষ হয় না। তার নাম ডাকবাক্স।
চিঠি আসলে সেই চিঠিতে প্রিয়জনের আকুতি ঝড়ে পড়তো। বাবা মা কিংবা ভাই বিদেশ থেকে চিঠি পাঠালে তার নামটি লিখেছেন কি না জানতে চিঠির পাঠকের দিকে হা করে চেয়ে থাকতেন। ভুলে হয়তো তার নামটি না লেখা হলে কেঁদে বুক ভাসাতেন।
কতো আপনজন, প্রেমিক প্রেমিকা তার মনের কথা উজাড় করে লিখতো চিঠিতে। মুখে যা বলা না যেত তা চিঠির মাধ্যমে প্রকাশ করা সহজ ছিল। এমনি কত আনন্দ বেদনা সুখ দুঃখের কালের সাক্ষী হয়ে এখনও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ডাকবাক্সকে। কালের বিবর্তন এ এখন শুধু স্মৃতি।